ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

খাবার তৈরির স্থানে কুকুরের বিচরণ

শরিফুল ইসলাম জুয়েল, ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
খাবার তৈরির স্থানে কুকুরের বিচরণ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ইবি (কুষ্টিয়া): পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সুস্থ জীবনের জন্য জরুরি। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের জন্য যেন তা সোনার হরিণ।

ডাইনিংয়ে কিংবা বাইরের হোটেলে, কোথাও নেই স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা।
 
হলের বাইরে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপিত বিভিন্ন হোটেলে বেশি দামে খাবার কিনে খান অনেক শিক্ষার্থী। কিন্তু এখানেও স্বস্তি নেই। সকাল-সন্ধ্যায় হোটেলের যে টেবিলগুলোতে রুটি কিংবা পরোটা তৈরি হয় অথবা শিক্ষার্থীরা যেখানে বসে খাবার খায়, রাতে সেখানেই উঠে খাবার খায় কুকুর।
 
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে কয়েকটি খাবারের হোটেল গড়ে উঠেছে। যেগুলো এতটাই নোংরা যে সেখানে খেতে গেলে যেকোন মানুষের অরুচি ধরবে। শিক্ষার্থীরা নিছকই জীবনের তাগিদে সেখানে খেতে যায়। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা খাবার হাতে নিয়ে হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন।
 
এসব হোটেলের রান্নার স্থান ও উপকরণগুলোও ব্যবহারের পরে যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়। ফলে বিভিন্ন প্রাণি রাতভর এগুলোতে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ খায়। সকালে আবার সেই পাত্রেই রান্না করে হোটেল মালিকরা শিক্ষার্থীদের খাওয়ায়।

বাংলানিউজের ক্যামেরায় ঠিক এমনই চিত্র ধরা পড়ে। রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে ‘আফজাল মামা’র হোটেলে দেখা যায় অরুচিকর পরিস্থিতি। সেখানে হোটেলের সামনে রাখা রুটি বানানোর টেবিলের উপরে লেগে থাকা আটা চেটে খাচ্ছে কুকুর। টেবিলের নিচে আরো কয়েকটি কুরের বাচ্চা দেখা যায়। সেখান থেকে গিয়ে জিয়া হলের সামনে দেখা যায় একই রকম চিত্র। সেখানে ‘কুদ্দুস মামা’র হোটেলের সামনে রাখা রুটি বানানোর টেবিল। তার উপরেও একটি কুকুর।
 
এভাবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ রাতভর হোটেলের বাইরে পড়ে থাকে। স্বাস্থ্য বিশষজ্ঞরা বলছেন, কুকুর খাওয়া এ ধরনের পাত্রে রান্না করা খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে জলাতঙ্কসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটোরিয়া চালু থাকলেও সেখানে রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। ঠিকমত উপকরণ ও সুযোগ সুবিধার অভাবে এক সঙ্গে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী সেখানে খেতে পারে না। বসার টেবিল চেয়ার, খাবারের প্লেট, গ্লাস, জগ ইত্যাদির অভাবে ঠিকভাবে সেবা দিতে পারছেনা বলে জানান ক্যাফেটেরিয়ার ম্যানেজার মাসুদুর রহমান সাবু। ক্যাফেটোরিয়া সংলগ্ন ওয়াশরুম বিগত ৭/৮ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে পরিষ্কারের অভাবে।  
 
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে কথা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. জাফর সাদিক মিলনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কুকুর মূলত জলাতঙ্ক ছড়ায়। তবে পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন মারাত্বক ব্যাধির জীবাণুও কুকুরের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।  
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খাবারের মান ঠিক রাখতে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাইরের হোটেলের বিষয়েও আমরা সচেতন।  
 
ক্যাম্পাসে অবস্থিত বিভিন্ন হোটেলের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬      
এমজেড

**  ইবির সেই খাবারের হোটেল বন্ধ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।