২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের কথা মনে আছে? যেখানে লিওনেল মেসি শেষমেশ সেই বহু কাঙ্ক্ষিত ট্রফিটা জিতেছিলেন। প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হারের ধাক্কা, এরপর মেক্সিকো আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তীব্র প্রতিরোধ—তবু দলকে নিয়ে এগিয়ে গেছেন মেসি, জিতিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বসেরার মুকুট।
আজ, দুই বছর পর, মেসি আরেকটি মঞ্চে—তবে এবার প্রত্যাশা একটু কম। ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন তিনি। যদিও বিশ্বকাপের মতো মর্যাদা নেই এই টুর্নামেন্টের, তবুও ইন্টার মায়ামির মতো তরুণ ও সীমিত সামর্থ্যের দলের জন্য এটা অনেক বড় মঞ্চ। আর প্রতিপক্ষ? ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
২০২২ সালে মেসিকে ঘিরে ছিলেন মাক আলিস্তার, এনজো ফার্নান্দেস, দি পলদের মতো নিঃস্বার্থ সৈনিকরা। আর আজ ইন্টার মায়ামিতে আছেন সুয়ারেস, বুসকেতস, আলবার মতো বন্ধুরা—তবে বাকিরা তুলনামূলকভাবে কম অভিজ্ঞ। বেঞ্চে প্রায় নেই বিকল্প। শেষ ম্যাচে পালমেইরাসের বিপক্ষে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-২ ড্র করে গ্রুপ রানার্সআপ হয় মায়ামি। অর্থাৎ, শেষ ষোলোতে তাদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে পিএসজি।
এই দলকে নিয়ে পিএসজিকে হারানো স্বপ্নের মতোই। কিন্তু মেসির তো অভ্যাস হয়ে গেছে অসম্ভবকে সম্ভব করার।
মেসির জন্য এই ম্যাচ আরও এক কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। এটিই তার প্রথম ম্যাচ সাবেক ক্লাব পিএসজির বিপক্ষে। সেই ক্লাব যেখানে তিনি কখনও সুখে ছিলেন না, যা তিনি নিজের কথাতেই স্বীকার করেছেন: 'প্যারিসে আমার দুই বছর ছিল কষ্টের। প্রতিদিন, প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি অনুশীলন—কোনো কিছুতেই মন বসত না। সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছিল হুট করে, কারণ বার্সেলোনা ছেড়ে দিতে হয়েছিল। '
তাই এবার মেসির সামনে শুধু প্রতিপক্ষ নয়, আছে আত্মসম্মানের লড়াইও।
পালমেইরাসের বিপক্ষে গোল করে এবং অ্যাসিস্ট দিয়ে মেসি জানান দিয়েছেন, তার মধ্যে এখনও সেই পুরনো ছোঁয়া রয়ে গেছে। আলবা বলেন, 'সে এখনও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। বয়স ৩৮ হলেও তার মধ্যে শিশুদের মতো খুশি নিয়ে খেলে। '
পিএসজি-র মতো শক্তিশালী দলকে হারাতে হলে মায়ামিকে খেলতে হবে নিখুঁত ফুটবল। হয়তো একটা অলৌকিক কিছু প্রয়োজন হবে। হয়তো মেসির আবারও সেই কাতার ২০২২-এর স্পিরিট জাগিয়ে তুলতে হবে। পারবেন কি তিনি? হয়তো না। কিন্তু যদি পারেন—তাহলে আবারও প্রমাণ হবে, ইতিহাস গড়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত একজন লিওনেল মেসি।
এমএইচএম