বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কি শেষের পথে? পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দৃষ্টিতে এখন খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নন ডেনমার্কপ্রবাসী এ মিডফিল্ডার। জাতীয় দলের সর্বশেষ তিন ম্যাচে ২৭০ মিনিটের মধ্যে মাত্র ৭৬ মিনিট মাঠে ছিলেন জামাল, অর্থাৎ বাকি ১৯৪ মিনিটই তাকে কাটাতে হয়েছে বেঞ্চে।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুর ও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে তো শুরু থেকেই একাদশে জায়গা পাননি জামাল। এমনকি এই দুই গুরুত্বপূর্ন ম্যাচে বদলি হিসেবেও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তার। অথচ তিনি দলের অধিনায়ক! এবিষয়ে প্রশ্নে সিঙ্গাপুর এবং ভুটান ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিব্রত হতে হয়েছে জামালকে। জামাল বলেছিলেন, ‘কোচকে জিজ্ঞাস করেন। তিনিই ভালো জানেন। আমাকে কেন প্রশ্ন করছেন। ’
সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগের দিনই সংবাদ সম্মেলনে তোলপাড় করে দেওয়া এক প্রশ্ন এসেছিল জামালের উদ্দেশে, ‘আপনি কি কালকের ম্যাচে খেলবেন?’ ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে থাকা একজন অভিজ্ঞ ফুটবলারের জন্য এমন প্রশ্ন যে কতটা বিব্রতকর, তা তার উত্তরেই স্পষ্ট, ‘এটা ভালো বলতে পারেন কোচ। আমি জানি না। ’
২০১৩ সালে প্রথম প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ান জামাল। পারফরম্যান্স, নেতৃত্বগুণ এবং ব্যক্তিত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টারবয়। তবে ৩৫ বছর বয়সে এসে আর আগের মতো ধার দেখা যাচ্ছে না। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে এই সময় পর্যন্ত একটি ম্যাচেও পুরো ৯০ মিনিট খেলেননি তিনি।
৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে একটি অ্যাসিস্টটি এসেছিল তার পা থেকে। কিন্তু সে ম্যাচেও খেলেছেন মাত্র ৪৫ মিনিট। তার আগের সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেও মাঠে নামানো হয়েছিল ম্যাচের শেষ দিকে—একটিতে ১৬ মিনিট, অন্যটিতে ১৫ মিনিট।
জাতীয় দলের মাঝমাঠে এখন ভরসার নাম হামজা চৌধুরী সামিত সোম। কোচ ক্যাবরেরার পরিকল্পনায় জামালের ভূমিকা এখন প্রায় ‘নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’-এর মতোই।
সময়ই বলে দেবে জামাল ভূঁইয়ার জাতীয় দলের অধ্যায় এখানেই শেষ হচ্ছে কিনা। তবে পরিসংখ্যান এবং সাম্প্রতিক কোচের সিদ্ধান্ত বলছে, তার ক্যারিয়ার এখন স্পষ্টভাবে এক অনিশ্চয়তার গন্তব্যে পৌঁছে গেছে।
এআর