ঢাকা, সোমবার, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৮ মহররম ১৪৪৭

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

টানা বৃষ্টিতে আউশ ক্ষেত-আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৮, জুলাই ১৪, ২০২৫
টানা বৃষ্টিতে আউশ ক্ষেত-আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি জলাবদ্ধতার কবলে ধানক্ষেত।

নোয়াখালী: টানা বৃষ্টি ও ফেনী মহুরী নদী থেকে আসা পানিতে নোয়াখালীর আউশ ধানক্ষেত ও আমনের বীজতলা এবং শাক-সবজিক্ষেতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া এখনো জেলার ছয় উপজেলার ৫৭ ইউনিয়ন জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছে।

এতে এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার ৯৫০টি পরিবার।

ক্ষেতগুলোতে পানি জমে দেখা দিয়েছে গোড়া পচাসহ বিভিন্ন রোগবালাই। এদিকে কৃষকরা বলছেন, এতে বাজারে আমন ধানের বীজের দাম বেড়েছে। বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে প্রান্তিক চাষিরা।

এর আগে ৭ জুলাই জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়নে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে আউশক্ষেত ও আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আউশের ক্ষেত ও আমনের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়বেন কৃষকরা। ফলে উপজেলার আউশের ও আমনের বীজতলা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জলাবদ্ধতার কবলে ধানক্ষেত।

সুবর্ণচরের স্থানীয় কৃষকরা জানান, চারদিক পানির নিচে ডুবে থাকায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করার মতো উঁচু জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে উঁচু জায়গা আমনের বীজতলা করার জন্য ভাড়া নিচ্ছে। কিন্ত পুঁজির অভাবে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। দ্রুত পানি না নামলে আউশ, আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে।

কোম্পানীগঞ্জের কৃষকরা জানান, হঠাৎ এমন দুর্যোগের মুখে পড়ে দিশেহারা কৃষকরা। ফলন্ত সবজির মাঠ পানিতে শেষ হয়ে যাওয়ায় দায়-দেনা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা কৃষক। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আমাদের সহায়তা প্রয়োজন।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় মোট পাঁচ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে আছে। এরমধ্যে ৮৯১ হেক্টর আমনের বীজতলা, দুই হাজার পাঁচশ হেক্টর আউশের বীজতলা, এক হাজার দুইশ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৫৭৫ হেক্টর শরতের সবজিক্ষেত নিমজ্জিত অবস্থায় আছে।

জলাবদ্ধতার কবলে ধানক্ষেত।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখনো জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছে। এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার ৯৫০টি পরিবার। ক্ষতির শিকার হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার ৪০৩ জন মানুষ। বিভিন্ন উপজেলা পায়ের ৫৮টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে জলাবদ্ধতায়। বর্তমানে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় এক হাজার ২৩ জন মানুষ রয়েছে। মাঠে কাজ করছে ২৯টি মেডিকেল টিম।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মীরা রানি দাস জানান, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় বীজতলা ও সবজি ক্ষয়ক্ষতির হার অপেক্ষাকৃত বেশি। সেনবাগ এবং সুবর্ণচরের তুলনায় কবিরহাট উপজেলায় পানির ধীরগতিতে সরছে। পানি সরে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের ফসল যাতে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে তাদের বুদ্ধি পরামর্শ দিচ্ছেন।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।