ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সংসদ নির্বাচন না করেই দলের নিবন্ধন পাওয়া যাবে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
সংসদ নির্বাচন না করেই দলের নিবন্ধন পাওয়া যাবে ...

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার জন্য কোনো দলকে আর আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। এক্ষেত্রে অন্যান্য শর্ত পূরণ করলেই নিবন্ধন পাওয়া যাবে।

এমন বিধান রেখে ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন-২০২০’ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।  

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে তাতে ছয়(এ) অধ্যায় যুক্ত করে দল নিবন্ধনের আইনগত ভিত্তি দাঁড় করিয়েছিল ইসি। বর্তমানে আরপিও থেকে সেই অধ্যায়টি তুলে দিয়ে নতুন একটি আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।  

২০০৮ সালের আরপিওর বিধান অনুযায়ী, নিবন্ধন পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে তিনটি বিষয়ের মধ্যে দু’টি পূরণের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছিল। প্রথমত, সে সময় নিবন্ধন পেতে হলে স্বাধীনতার পর থেকে যে কোনো দু’টি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে দু’টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলীয় প্রতীকে কমপক্ষে একটি আসন পেতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেসব আসনে অংশ নিয়েছিল সংশ্লিষ্ট দলের প্রার্থীরা, সেসব আসনে প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে। তৃতীয়ত, দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০ উপজেলায় কমিটি ও কার্যালয় থাকতে হবে এবং প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকতে হবে।

এই তিনটি প্রধান শর্তের মধ্যে যে কোনো দু’টি শর্ত পূরণ করলেই সংশ্লিষ্ট দলকে নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে ধরা হতো। এসব শর্ত পূরণ করেই ইসিতে ৪১টি দল নিবন্ধিত রয়েছে।

সেনা সমর্থিত সরকারের সময়কার সেই বিধানটিই বর্তমানে উঠিয়ে দিচ্ছে ইসি। ফলে অতীতের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ইতিহাস না থাকলেও ইসি থেকে দলের নিবন্ধন পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. আলমগীর জানান, ২০০৮ সালের আইন এখনও বলবৎ আছে। সে অনুযায়ী, নিবন্ধন ছাড়া কোনো দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। এখন একটা নতুন দল গঠন হলো, সে দল যদি নিবন্ধিত হতে চায়, তবে এই বিধানের কারণে নিবন্ধন পাবে না। কেননা, নিবন্ধন না থাকায় সে দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। আর নির্বাচনে অংশ না নিতে পারলে সে নিবন্ধন পাবে না। তাই বিধানটি তুলে দেওয়া হচ্ছে।

সে সময় এটা করা হয়েছিল। কারণ তার আগে তো কোনো নিবন্ধন প্রক্রিয়া ছিল না। কিন্তু তখন অনেক দল ছিল, যারা অতীতের নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়েছে। তাই সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন নতুন নতুন দল হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। তাহলে তরুণ প্রজন্ম কী করে দল গঠন করে নিবন্ধন নেবে। তাই বিধানটির এখন আর প্রয়োজন নেই।

এদিকে নিবন্ধন পেতে হলে অন্যান্য কিছু শর্ত আগের মতোই থাকছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাস্তির বিষয়টি বাড়ানো হচ্ছে। আর চাঁদা সংগ্রহ করার পরিমাণও কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। আর কোনো দল নিবন্ধন পাওয়ার পর যদি পরপর দু’টি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তবে নতুন আইনের খসড়ায় সেই দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে।  

এছাড়া দলের প্রতিটি পর্যায়েরর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ পূরণের সময়সীমা শেষ হচ্ছে ২০২০ সালেই। তাই দলগুলোকে আরও পাঁচ বছর সময় দেওয়ার বিষয়টি খসড়ায় রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে এই শর্তটি পূরণে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় পাচ্ছে দলগুলো। পাঁচ বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

ইসি সচিব মো. আলমগীর জানান, আমরা একটা প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছিলাম নাগরিক সমাজেরর মতামত পাওয়ার জন্য। এছাড়া দলগুলোকেও প্রাথমিক খসড়াটি পাঠিয়ে মতামত চেয়েছিলাম। আ'লীগসহ ১৬টি নিবন্ধিত দল, ১০টি অনিবন্ধিত দল এবং ১০ জন ব্যক্তি মতামত দিয়েছেন। সেই সকল মতামতের ভিত্তিতেই আমরা খসড়াটি চূড়ান্ত করেছি। ছোটখাটো কিছু ভুলত্রুটি আছে, এগুলো সংশোধন করে শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
ইইউডি/এজে
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।