ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ আশ্বিন ১৪৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

এনসিপির হুঁশিয়ারিকে হুমকি মনে করছেন না সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০২, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫
এনসিপির হুঁশিয়ারিকে হুমকি মনে করছেন না সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন

শাপলা প্রতীক আদায় করে নিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হুঁশিয়ারিকে হুমকি মনে করছেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা যথারীতি আইন মোতাবেক কাজ করেই যাবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শাপলা প্রতীকের বিষয়ে সিইসি বলেন, আপনারা খুব আলাপ-আলোচনা করেন এ বিষয়ে। এ বিষয়ে সচিব মহোদয় বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন, আমি আর বেশি বিশেষ কথা বলতে চাই না। শুধু এটুকু বলি, শাপলা চেয়েছিল কিন্তু মাহমুদুর রহমান মান্নার যে দল আছে নাগরিক ঐক্য, ওরা কিন্তু প্রথম চেয়েছিল। একবার দরখাস্ত দিয়েছে, তারপর আমার সাথে দেখা করেছে। তখন আপনারা কোনোদিন আলোচনায় তো আনেনই নাই যে, শাপলা নিয়ে যে নাগরিক ঐক্য আবেদন করেছে। এখন আলোচনা করছে। নাগরিক ঐক্য দরখাস্ত করেছে, আমরা ওদের তো দেইনি। প্রথম চেয়েছে দেই নাই। কিন্তু এখন দেখি যে, আপনারা খুব আলোচনায় আনছেন। এ নিয়ে আমাদের সিনিয়র সেক্রেটারি ইতোমধ্যে অনেক ব্রিফ করেছেন। আমি এ ব্যাপারে আর কোনো বক্তব্য এখন দিতে চাই না।

বিধিমালা সংশোধন করার জন্য এনসিপি চিঠি দিয়েছে, আপনারা কি বিধিমালা সংশোধন করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, চিঠিটা গতকালকে দিয়েছে শুনেছি। এটা আমাদের কমিশনে আলোচনা করে, এটার ব্যাপারে আমাদের করণীয় যা নির্ধারণ করব। আমার তো এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আমরা সব কমিশনে বসে আলোচনা করে যা করার করব। কমিশনের সভায় এটা আলোচনা করব, ওনাদের চিঠি নিয়ে। আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত আমরা নেব কমিশন সভায়।

প্রতীকের বিধিমালা সংশোধনের পর ফের সংশোধনের জন্য এনসিপির চিঠি কতটুকু যৌক্তিক বলে মনে করছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোনো মন্তব্য করব না। এটা এখন কমিশন সভায় সবাই আলোচনা করে তারপরে সিদ্ধান্ত। যে কেউ তো এই দেশের নাগরিক, আমাদের চিঠি দিতেই পারে। আর রাজনৈতিক দল আমাদের স্টেকহোল্ডার, মেজর স্টেকহোল্ডার। আর এরা একটা অভ্যুথানের নেতৃত্ব দেওয়া দল। আপনারা জানেন নেতৃত্ব দেওয়া, এখানে অ্যাক্টিভলি পার্টিসিপেট করা দল। সুতরাং তারা একটা চিঠি দিয়েছে, এই চিঠি দেওয়ার মধ্যে আমি কোনো অসুবিধা দেখি না।

সিইসি আরও বলেন, চিঠির বিষয়টা আমরা বিবেচনা করে দেখব কমিশন মিটিংয়ে। তারপরে যা করার সেটা আমরা করব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নাগরিক ঐক্য রেজিস্টার পার্টি, তাদের একটা প্রতীক (কেটলি) আছে জানি। তারা এটার পরিবর্তে শাপলা চেয়ে দুইটা চিঠি দিয়েছে। আমার সাথে দেখাও করেছে, কিন্তু আমরা দেই নাই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এটা দেওয়া যাবে না। আমি জবাব দিয়ে দিয়েছি। পরে এনসিপি আবেদন করেছে। তারপর এনসিপিরটা আপনারা জানেন, এটা নিয়ে আমি ব্যাখ্যা করতে চাই না।

কী কারণে দেন নাই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখন ব্যাখ্যা করব না জাতীয় প্রতীক...। কমিশন ডিসিশন নানাবিধ বিবেচনায় নিতে পারে। এখন আমি যদি প্রত্যেকটা ডিসিশনের কারণ ব্যাখ্যা করতে যাই তাহলে মুশকিল আছে। আমরা কমিশনের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন ওনারা চিঠি দিতে পারেন। চিঠি দেওয়ার মধ্য আমি কোনো ভুল দেখি না।

এনসিপি শুধু চিঠি দেয়নি, তাদের কথা হলো—যেকোনো ভাবেই হোক তাদের এই প্রতীকই পেতে হবে, অন্য কোনো প্রতীক তারা নেবে না। এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, শাপলা প্রতীক না দিলে কীভাবে আদায় করে নিতে হয়, তা তারা জানে। কাজেই এনসিপির এই বক্তব্যকে থ্রেড মনে করেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজনৈতিক নেতারা অনেক কথা বলেন। এটা ওনাদের বলার অধিকার আছে। ওনারা বলতে পারেন, আমরা তো আর সেরকম জবাব দিতে পারব না। আমরা শুনতে পারব। আমরা শ্রোতা হিসেবে অত্যন্ত উত্তম, অত্যন্ত উত্তম। আমরা শুনেই যাব এবং আমরা যথারীতি আইন মোতাবেক কাজ করেই যাব। আমরা মোটেও হুমকি মনে করি না। কারণ ওনারা তো দেশদ্রোহী না, দেশপ্রেমিক। ওনাদের এগুলোকে আমি হুমকি মনে করি না। ওনারাও দেশপ্রেমিক, ওনারাও দেশের মঙ্গল চান, দেশের ভালো চান। যে ধরনের কর্মকাণ্ড করলে দেশের মঙ্গল হবে, সেটা ওনারাও বোঝেন। আমি এটাকে দেশের জন্য হুমকি মনে করি না, আমাদের জন্য কোনো হুমকি মনে করি না।

বুধবার জাতীয় সংসদের প্রতীকের বিধিমালা সংশোধন করে ১১৫টি প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে ইসি। এতে জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে নৌকা প্রতীক। শাপলা প্রতীক রাখা হয়নি। এনসিপি বিধিমালা সংশোধনের অনুরোধ জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছে।

ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।