ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুরনো চেহারায় নিউমার্কেট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
পুরনো চেহারায় নিউমার্কেট নিউমার্কেট। ছবি: রাজীন চৌধুরী ও শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সমঝোতা বৈঠকের পর খুলেছে নিউমার্কেট। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসছেন ক্রেতারা। এতে স্বস্তি ফিরেছে বিক্রেতাদের। অন্যদিকে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ দোকান খুললেও অনেকে পারছেন না। এদিকে নিউমার্কেট এলাকা যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের কারণে দুদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার দেখা যায় নিউমার্কেট এলাকার প্রায় সব দোকানপাট খুলেছে। বাড়ছে ক্রেতাদেরও ভিড়। সব আতঙ্ক কাটিয়ে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে আসছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। দোকানদের বেচাবিক্রিও চলছে মোটামুটি। তবে নিউমার্কেটের মধ্যে ভেতরে ও বাইরের দোকানগুলো খুললেও রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকানগুলো সকালে বন্ধ থাকলেও বিকেলে বেশ কিছু হকারকে ফুটপাতে বসতে দেখা যায়।

ফুটপাতে মাঝে মধ্যে দোকান বসানোর প্রস্তুতি নিলেও দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা এসে তাদের উঠিয়ে দিচ্ছেন। বস্তায় জিনিস বাঁধা অবস্থায় ফুটপাতের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা অসহায়ের মতো বসে রয়েছেন। নিউমার্কেটের নিরাপত্তা কর্মীরা জানিয়েছেন, পুরোদমে মার্কেট খোলা হয়েছে। ঈদের কেনাকাটা করতে ক্রেতারাও আসছেন। বিক্রেতারাও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। এদিকে নিউমার্কেটের আশেপাশে থাকা নূরজাহান মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটও পুরোদমে খোলা হয়েছে। সেখানেও ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। তবে এসব মার্কেটের সামনে প্রতিদিনের মতো ফুটপাতের দোকানগুলো সকালে বন্ধ থাকলেও বিকেলে কিছু দোকান খুলতে দেখা যায়।

ক্রেতা আসমা বেগম বলেন, গত বুধবার (২০ এপ্রিল) কেনাকাটা করতে এসে ফিরে গেছি। নিউমার্কেট বন্ধ ছিল। সকালে খবর দেখে আবার কেনাকাটা করতে এসেছি। আজ কেনাকাটা শেষ করে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবো।

আরেক ক্রেতা আরমান হোসেন বলেন, দুইদিন ধরে নিউমার্কেটে আসবো করে আসিনি। কেনাকাটা করার প্রয়োজন থাকলেও আসিনি। আজ স্বাভাবিক হয়েছে শুনে মার্কেটে এসেছি।

শাড়ির দোকানের বিক্রেতা নাজমুল বলেন, কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছি। সকাল থেকে মোটামুটি ক্রেতা আসছে। এ দুদিনে অনেক ক্ষতি হয়েছে।

গাউছিয়া মার্কেটের কসমেটিকসের এর দোকানি আকাশ বলেন, প্রতি ঈদে শেষের দিকে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকে কসমেটিকস পণ্যের। পোশাক কেনার পর সবাই কসমেটিকস ক্রয় করেন। বেচাবিক্রি ভালোই হচ্ছে বলেও জানান আকাশ।

এদিকে ফুটপাতের দোকানি মো. সুজন। আচারের দোকান নিয়ে নূর ম্যানসনের সামনে বসতাম। আজ এখনও দোকান খুলতে পারছি না। পকেটেও টাকা নেই। আর আমাদের গরিবদের ওপর সব অত্যাচার। চাঁদপুরে বউ, বাচ্চা না খেয়ে আছে। প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার ইনকাম হয়।  

ফুটপাতে ব্যাগ বিক্রেতা আলমগীর বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। আজ তিনদিন ধরে দোকান খুলতে পারি না। এ ঈদে সবাই অভাবে আছে। ঈদে বাড়িতে যাবো পকেটে কোনো টাকা নেই। পরিবারে দুই ভাই ও মা রয়েছে। অভাবের জন্য ঢাকায় আসছি। ফুটপাতে ব্যবসা করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে পরিবারের খরচ চলে যায়। এ দুদিন ধরে পরিবারকে কোনো টাকা-পয়সা দিতে পারছি না। এখনও আতঙ্ক কাজ করছে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কেউ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।