ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

খেলাপি সংস্কৃতি উঠে গেলে দেশ আরও এগিয়ে যেত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৮, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
খেলাপি সংস্কৃতি উঠে গেলে দেশ আরও এগিয়ে যেত ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান-ছবি-শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ব্যাংকের তো কোনো নিজস্ব টাকা নেই। ১৬ কোটি মানুষের টাকা। ব্যবসায়ীদের খেলাপি সংস্কৃতি যদি উঠে যায়, এই প্রবণতা কমে যায়, বাংলাদেশের আরও অনেক দ্বার উন্মোচিত হবে।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
 
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের হাউজিংয়ে সাফল্যের পেছনে অগ্রণী ব্যাংকের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।

এই ব্যাংক থেকে রিভারভিউ হাউজিংয়ের জন্য ১০৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেটা দিয়ে আমাদের বিশাল প্রসার। তখনকার ১০৭ কোটি টাকা আজকের এক হাজার কোটি টাকার সমান। সেই টাকা আমরা পরিশোধ করেছি। সে সময় হাউজিংয়ে লোন দেওয়া একটা বিশাল বড় দুঃসাহসের ব্যাপার ছিল। ল্যান্ড ডেভেলপমেন্টে প্রজেক্টে আমি একমাত্র ঋণ গ্রহিতা যিনি অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছি এবং ঋণ ফেরত দিয়েছি।
 
‘বিভিন্ন পেপার মিলসের প্রত্যেকটা লোনেই তারা অংশ নেয়। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আমরা লোন নিয়েছি-দিয়েছি। ফুডেও আমরা দু’টি লোন নিয়েছি। একটি পরিশোধ হয়েছে। আরেকটিও পরিশোধ হয়ে যাবে। বিগত ৩০ বছরে বসুন্ধরা গ্রুপের সবচেয়ে বড় সাফল্য কোথাও কোনোদিন সুদ মাফ করার কথা বলেনি। কোথাও বলেনি আমাদের দায়মুক্তি দেন। আমরা সবসময় মানুষের জন্য, দেশের জন্য কাজ করছি। বাংলাদেশ না হলে আজ আমি ও বসুন্ধরা গ্রুপ হতো না। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্যে আমরা সবাই আজকের এই অবস্থানে। ’
 
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। ১০০টি ইকোনোমিক জোন হচ্ছে। এরমধ্যে দু’টি ইকোনোমিক জোন আমিও করছি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এই ইকোনোমকি জোনের ৫০ শতাংশ বাস্তবায়ন হলে দেশ রকেট গতিতে এগিয়ে যাবে।
 
‘আমি মনে করি চীন, ভারত সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ। চীন, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। আমার এই পর্যায়ে আসার জন্য অগ্রণীসহ যেসব বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকিং করি তাদের অবদান রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক আমার মতো হাজার হাজার উদ্যোক্তা তৈরি করেছে এবং প্রতিদিন করে যাচ্ছে।
এটা সত্যি কথা সরকারি ব্যাংকগুলো যে হারে উদ্যোক্তা তৈরি করছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো সেই হারে পারে না। এখন দেখা যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোও অ্যাগ্রেসিভ। ’ বলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান।
 
তিনি বলেন, অগ্রণী ব্যাংক বাংলাদেশের শিল্পায়নে বলিষ্ঠ অবদান রেখেছে। ১৯৯২ সালে বসুন্ধরা পেপার মিলসের জন্য বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। বসুন্ধরা গ্রুপ এখন মোট কাগজের ৫০ শতাংশ উৎপাদন করে। এটি আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। বাংলাদেশের কাগজ এখন ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। চায়নিজ ইমপোর্টারা ইমপোর্ট করতে চাচ্ছে। যেখানে আমরা ছিলাম আমদানি নির্ভর দেশ, আজ আমরা হতে চলেছি রপ্তানিমুখী দেশ।
 
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (ফ্লাওয়ার মিল ইউনিট-২) জন্য ৮৯ কোটি টাকার ঋণচুক্তিতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত।
 
চারটি ব্যাংক যৌথভাবে এ ঋণ বিতরণ করবে। লিড অ্যারেঞ্জমেন্টে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। বাকি তিনটি ব্যাংক হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
 
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস উল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত, ঢাকা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরানুল হক, কর্মাস ব্যাংকের ডিএমডি কাজী রেজাউল করিম ও পূবালী ব্যাংকের ডিজিএম সুলতানা শরীফুন্নাহার।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।