একুশ বছর পেরিয়ে বাইশে বছরে পা রাখল দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিং মল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স। এ উপলক্ষে জমকালো এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (বিসিডিএল)।
অনুষ্ঠানে ক্রেতা সাধারণ, দোকান মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে ২১ বছরে অর্জিত সাফল্য উদযাপন করছে বসুন্ধরা সিটি।
বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ এহসান রেজা আগত অতিথিদের নিয়ে শনিবার (০৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ফিতা কেটে জমকালো অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মধ্য দিয়ে বর্ষপূর্তির আয়োজন শুরু হয়।
বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ২১ বছর পূর্তিতে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ এহসান রেজা বলেন, ২১ বছর অনেক লম্বা সময়। এই দীর্ঘ স্বপ্নযাত্রার ২১ বছর আজ পূর্ণ হলো। আমরা সবাই আজ সেটা উদযাপন করছি। তবে আমরা আজ শুধু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করব না। আজ থেকে ২৬ থেকে ২৭ বছর আগে বাংলাদেশে এরকম একটি বিশাল শপিং মলের স্বপ্ন দেখেছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করেছেন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের দোকান মালিক, ভাড়াটিয়া মালিক ও কর্মচারীরা। তাদের পরিশ্রমের ফলে আমরা আজকে এই মাইলস্টোন অর্জন করতে পেরেছি। এজন্য এই শপিং মলের দোকান মালিক, ভাড়াটিয়া মালিক ও কর্মচারীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ২১ বছরের এই যাত্রায় বসুন্ধরা সিটিং শপিং মল অনেক চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে গেছে। কিন্তু আমরা সবাই একসাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি বলে এ চ্যালেঞ্জ জয় করতে পেরেছি। এ কারণেই বসুন্ধরা সিটি শপিং মল আজ শুধু মল নয়, এটি ‘প্লেস পিক কাম ইউথ ফ্যামিলি লাভ’। আমরা তাদের এই অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত, আরও আনন্দময় ও স্মরণীয় করে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর।
শেখ এহসান রেজা বলেন, এই মলে ৮ হাজারের বেশি লোক শ্রম দিচ্ছেন। গ্রাহকদের সেবা দিতে তারা প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা কাজ করেন। এরাই বসুন্ধরার সিটির হিরো। বিসিডিএলে ১২০০ স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে এই শপিং মলে আগতদের সেবা দিতে।
বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ডিএমডি আরও বলেন, বর্ষপূর্তির আয়োজনের অংশ হিসেবে থাকছে ফ্ল্যাশ মভ ফ্যাশন ফেস্ট ও কনসার্ট। আজকের আয়োজনের জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের টাইটেল স্পন্সর অপো, পাওয়ারড বাই স্পন্সর বিভো ও ইনফিনিটিকে। এ ছাড়া ধন্যবাদ জানাই আমাদের সব অংশগ্রহণকারী ব্র্যান্ড, ফ্রিল্যান্ড ক্লাব হাউস, ফ্যাশনফেস্ট ও ইরানি বোরখা বাজারকে।
বসুন্ধরা সিটির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জমকালো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে বিপুল সংখ্যক দর্শকের সমাগম হয়েছে শপিং মলের অ্যাট্রিয়ামসহ প্রতিটি ফ্লোরে। রেলিং ঘেঁসে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখছেন তারা। হাজারো দর্শকের করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বসুন্ধরা গ্রুপের নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পান্থপথে কারওয়ান বাজারের কাছে অবস্থিত এই বহুতল ভবনটি আধুনিক স্থাপত্য নকশা অনুযায়ী নির্মিত হয়েছে। ২১ তলাবিশিষ্ট ভবন, যার নিচের ৮টি তলা বিপণিবিতানের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং অবশিষ্ট তলাগুলি বসুন্ধরা গ্রুপের দপ্তর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভবনের বিপণিবিতান অংশে প্রায় ২,৫০০টি দোকান রয়েছে। এ ছাড়াও আছে খাবারের দোকানের জন্য একটি নির্দিষ্ট তলা, একটি বড় শরীরচর্চা কেন্দ্র, একটি মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল, শিশুদের বিনোদনের জন্য টগি ফান্ড ওয়ার্ল্ড এবং বেসমেন্টে ৫০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। এ ছাড়া ছাদবাগানসহ সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই বিপণি বিতানটি ঢাকার নগরীর আধুনিকায়নের অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
প্রায় ২৫০০০ লোক প্রতিদিন এই বিপণিবিতান পরিদর্শন করে। এটি বাংলাদেশে পশ্চিমা ঢঙে নির্মিত প্রথম বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। ভবনটির প্রধান স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ ও মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ১৯৯৮ সালে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০০৪ সালের ৬ আগস্ট এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটি সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তত্ত্বাবধানে আছে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড।
জিসিজি/এমজেএফ