ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিম বঙ্গ নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদল: দিদিই হচ্ছেন মূখ্যমন্ত্রী!

তপন চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে ফিরে: | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০১১

ঢাকা: পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যে এবারের নির্বাচনে পরিবর্তনের হাওয়ায় ভাসছে ওখানকার মানুষ। কলকাতা শহরে বেশ কয়টি স্পটে যাকেই জিজ্ঞেস করেছি সোজা উত্তর সিপিএম এবার কাত, দিদিই মূখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন।

কলকাতা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিমান বন্দর থেকে দিল্লী যাওয়ার পথে পরিচয় হলো বুয়েট থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার রহমানের। তিনি ওখানকার স্কলারশিপ নিয়ে বাংলাদেশে বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলেন।

তিনি বললেন, ‘আমি নিজেও একজন সিপিএম সমর্থক, তবে আমিও চাই এবার পরিবর্তন আসুক, তৃণমূল ক্ষমতায় আসলে যে তারা জনগনের জন্যে আহামরি কিছু করে ফেলবে এটাও আমি বিশ্বাস করি না, তবে দীর্ঘ বাম শাসনে ওদের স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে গেছে।   ক্ষমতার পালাবদলে মানুষ হয়তো ওই স্বেচ্ছাচারিতার যাঁতাকল থেকে একটু হলেও মুক্তি পাবে। ’

স্মাট ওই শিক্ষিত যুবক যে মন্তব্য করলেন, টেক্সী চালকেরও একই উত্তর।   মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেসই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। টেক্স্রী চালক সুশীল মজুমদার বললেন, ‘বাবু আমি রাজনীতি বুঝি না, তবে সব জায়গায় সকলে এক কথায় বলছেন, দিদির দল সরকারে আসছে’।

কলকাতা শহরসহ বিভিন্ন জেলায় এ পর্যন্ত পর পর তিন দফায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের সময় কোথাও বড় ধরনের কোনও সংর্ঘষ না হলেও নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্ন স্থানে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার খবর ওখানকার সংবাদপত্রগুলো ফলাও করে প্রকাশ করছে।

এখনও রাজ্যের আরও কয়েকটি স্থানে নির্বাচন বাকী রয়েছে। এরই মধ্যে তৃতীয় দফার ভোট শেষ না হতেই সিপিএম দাবার চাল নতুন করেই খেললেন। একদিকে নির্বাচনে তৃণমূলের কালো টাকার ছড়াছড়ির অভিযোগ এবং অন্যদিকে দীর্ঘ ১৬ বছর আগে পুরুলিয়া অস্ত্র বর্ষনের নায়ক কিম ডেভি ও পিটার ব্লিচের বাম শাসন হটানোর সাম্প্রতিক  স্বীকারোক্তিকে পূঁজি করে সিপিএম নেতারা ঘুরে দাঁড়ালেন ।

 জাঁদরেল বাম নেতা বুদ্ধদেব, বিমান বসু , গৌতম দেবসহ অনেকে প্রকাশ্যে জনসভা থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের ব্রিফিংএ বললেন, কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্ত ৯৫‘ তে যেমন হয়েছিল এ ২০১১ তে  এসেও একই চক্রান্ত চলছে। সিপিএম নেতা গৌতম দেব প্রকাশ্যে জনসভায় বললেন, মমতা দুটো হেলিকপ্টার ভাড়া করার  টাকা পান কোথায়? তার দলের প্রার্থীদের প্রতিজনকে ১৫ লাখ টাকা করে দিয়েছেন। এতো টাকা কোথায় থেকে আসে তা হিসেব দিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে বুদ্ধদেব ভট্রাচার্যও জনসভায় ১৬ বছর আগে সিপিএমকে ক্ষমতা থেকে সরানোর কেন্দ্রের নীল নক্সার বর্ননা দেন।   আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিটে বসে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও বললেন, ৯৫‘ আর ২০১১ এর মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছি। তখনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির চক্রান্ত হয়েছিল, এখনও ৩৫৬ ধারা জারির গন্ধ পাচ্ছি। তিনি দেশী-বিদেশী চক্রান্তে কথাও বললেন।

তবে এসব অভিযোগকে তৃণমূল নেতারা তেমন পাত্তাই দিচ্ছেন না। মমতা, পার্থ চট্টোপধ্যায়সহ শীর্ষ তৃণমূল নেতারা সিপিএম’র বিরুদ্ধে পাল্টা চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ তুললেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি  সিপিএম’র রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।