ঢাকা, বুধবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩২, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দরে তিন মাসে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:১৯, অক্টোবর ৭, ২০২৫
বন্দরে তিন মাসে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি

চট্টগ্রাম: চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিং আগের অর্থ ছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ লাখ ২৭ হাজার ৭১৩ টিইইউস (২০ ফুট দীর্ঘ) কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ১৮৫ টিইইউস বেশি।

প্রবৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ।  

গত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৬ টন এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ হাজার ৩১টি।

বিগত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের ধারাবাহিক কর্মতৎপরতা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে প্রতিটি সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। বিশেষ করে কনটেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংসহ জেটি ও ইয়ার্ড সুবিধা সম্প্রসারণে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্দরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড (সিডিডিএল) তিন মাসে অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৯ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ হাজার ৭৫৪ টিইইউস বেশি। এই সময়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ম তিন মাসে এনসিটিতে মোট জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৭৮টি। বিগত অর্থবছরের চেয়ে ২৬টি জাহাজ বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ। এনসিটিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ১ম তিন মাসের কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ এবং প্রবৃদ্ধি এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবেও চট্রগ্রাম বন্দরের সব অর্জন ইতিবাচক সূচকে রয়েছে। ২০২৫-২৬ পঞ্জিকাবর্ষ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর নয় মাসে চট্রগ্রাম বন্দরে ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫০ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে চেয়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৬২৫ টিইইউস বেশি বা প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। একইভাবে বিগত নয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়েও সাফল্য রয়েছে। এ সময় মোট কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০ কোটি ২৭ লাখ ৪ হাজার ২৫৯ টন এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ হাজার ১৬১টি। কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭০ এবং ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ইত্যাদি বিশ্ব অর্থনীতির প্রত্যাশিত গতিকে মন্থর করেছে। পাশাপাশি পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসে কলম বিরতি এবং শাট্ ডাউনের মতো ঘটনায় বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তারপরও বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের একান্ত সহযোগিতায় বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে তেমন প্রভাব ফেলেনি, বরং কনটেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিং বেড়েছে এবং রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নতুন নতুন প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ও ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের একজন কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি বা অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড হিসেবে কাজ করে। জাতীয় রাজস্বের সিংহভাগ জোগান হয় এ বন্দর থেকেই। বন্দরের আধুনিকায়ন, দক্ষতার সাথে কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে জাহাজের গড় অবস্থানকাল হ্রাস এবং জেটি ও ইয়ার্ড সুবিধাদি সম্প্রসারণসহ নিরাপদ ও দক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় আমদানি-রপ্তানিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করাই হলো বন্দরের অভিলক্ষ্য। যা পূরণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে ৪৮ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা ও বন্দর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দর এগিয়ে চলছে।

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।