চট্টগ্রাম: আমাদের তিনটা প্রজেক্ট এখনো এলজিআরডি মিনিস্ট্রিতে (স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়) আছে। অ্যাডভাইজার সাহেব এটা যখন দেখেন যে এটা একটা প্রজেক্ট, উনি ফাইলটা আর মিনিস্ট্রিতে রাখেন না, ঘরে নিয়ে চলে যান।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নগরের জামালখানে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) ক্যাম্পাসে ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ময়লা পরিষ্কারের মতো যে যন্ত্রপাতি থাকার কথা সেগুলো নেই। অনেক যন্ত্রপাতি পুরোনো হয়ে গেছে। প্রায় বছর দুয়েক আগে যে মেয়র ছিলেন উনি দিয়েছিলেন ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প। দুই বছর ধরে সেই প্রকল্পের কিছুই হয়নি। ফাইনালি আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলাম এবং বললাম, ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের এ যন্ত্রপাতি যদি আমি আনতে না পারি তাহলে ৫৭টি খাল ও ৩ হাজার কিলোমিটার নালার কিছুই করতে পারবো না। যে যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো মেরামত করতে সময় ও টাকা লাগছে। আমি বলেছি, আমি লোন নেব না। মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য এ টাকা দিতে হবে। আমি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ করার জন্য আরেকটি প্রকল্প নিয়ে গেছি। উনি চট্টগ্রামে এলেন। আমি অনুরোধ করলাম, আমার কাজ এখনো হয়নি। মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার ধন্না দিলাম। ইতিমধ্যে আমাদের মতো করে আমরা খাল খনন করছি, নালা পরিষ্কার করছি।
চারশ কোটি টাকার আমার যে ইন্সট্রুমেন্টের প্রজেক্ট, সেটা ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে হয়ে গেল ২৯৮ কোটি টাকা। প্রায় একশ কোটি টাকা কেটে দিল। বলে দিল, ১৬০ কোটি টাকা লোন দিচ্ছে ৫ শতাংশ সুদে। আমি বোঝালাম, এটা সম্ভব নয়। এ ফাইলটা এখনো পর্যন্ত ওই জায়গায় রয়ে গেছে। আমি প্রতিদিন দৌড়াচ্ছি। আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। উনি চট্টগ্রামের মানুষ। উনার পিএসকে বার বার বলেছি। আমার মেশিনারিজ নেই। যেগুলো আছে ১৫-২০ বছরের পুরোনো।
আমি ফেইল করলাম মানে রাষ্ট্র ফেইল করল। একদম স্ট্রেইট ফেইল করল। একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানকে দিতে কার্পণ্য করল। আমি এটা দিতে পারছি না। এটা অমাদের ব্যর্থতা।
মেয়র বলেন, আমি বলেছি, জলাবদ্ধতা একটা মেজর প্রবলেম। এখানে যে উপদেষ্টাকে পাঠানো হল, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আমি উনার সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি। অনুরোধ করলাম। সবশেষে তিনি বললেন, প্রথমে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হয়ে যাক, তারপর আপনি সেটা পাবেন। আমার ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতার সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান হয়েছে। এখনো আমি সেটা পাচ্ছি না। কাজেই কথা আমরা সহজে বলি, কিন্তু এখানে কথার পেছনে কথা থাকে।
এই ইউকের প্রজেক্টটা আমি আর করতে পারিনি। জাপান ‘অ্যাজ ওয়েল অ্যাজ’ কোরিয়ার প্রজেক্টও। আজকে এগুলো যদি আমি অনেক দ্রুত পেতাম, তাহলে চট্টগ্রাম শহর অনেক সুন্দর করে দিতে পারতাম। এটা শুধু চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটা রাষ্ট্রের ও সরকারের ব্যর্থতা।
এআর/পিডি/টিসি