ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প

শিল্প-কৃষি-প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৫
শিল্প-কৃষি-প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সুলভ মূল্যে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো ছাড়াও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দেশের কৃষি ও ওষুধ শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রযুক্তি শিল্প ও দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলেও মনে করেন তারা।



মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলের মেঘনা হলে ‘পারমাণবিক শক্তি: উদ্যোগ, সুযোগ-সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ মত দেন আলোচকরা।

পরমাণু বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, সাংবাদিক-পরিবেশবিদদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে রাশিয়ার পরমাণু বিষয়ক অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘নিউক্লিয়ার.আরইউ’।
 
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে রাশিয়ার পরমাণু প্রযুক্তি ও বাংলাদেশের পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে তথ্যচিত্র তুলে ধরেন পরমাণু বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক লিলিয়া প্ল্যাতানভ।
 
পারমাণবিক বিদ্যুৎ অধিকতর লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে প্ল্যাতানভ বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক বিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ। এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিবেশের ওপর কী প্রভাব ফেলে তার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে রাশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা।
 
তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে পরিবেশের ওপর এর কোনো বিরূপ প্রভাব এখনো তারা পাননি। এমনকি, অন্যান্য উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পারিমাণ বায়ুদূষণ ঘটে তা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে খুবই সামান্য।

প্ল্যাতানভ আরও উল্লেখ করেন, নিরাপদ ও নির্ভরশীলতার প্রশ্নে রাশিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়কারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক অ্যাজেন্সির মান অনুযায়ীই তৈরি করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও তা যথাযথভাবে মানা হবে।    

উপস্থাপনায় প্ল্যাতানভ দেখান, রাশিয়ার ভিভিইআর-১২০০ টেকনোলজি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প এবং বিমান হামলা থেকে রক্ষা পেতে সক্ষম। পৃথিবীতে যে পরিমাণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার সিংহভাগ উৎপাদন করে আরেভা ফ্রান্স, এর পরেই আছে রাশিয়ার রসাটম।

প্ল্যাতানভ চীনের বিদুৎ উপাদনে পারমাণবিক বিদুৎ প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টিও তুলে ধরে বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আসলেই কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ব সেদিকেই অগ্রসর হচ্ছে।

সাংবাদিক, পরিবেশবিদ মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের নতুন কোনো প্রযুক্তি নয়। শিল্পোন্নয়নে পারমাণবিক প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার করা যায় তার গবেষণাও হচ্ছে আমাদের দেশে। তবে রাশিয়ার সহযোগিতায় রূপপুরে যে বিদ্যুৎ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। পরিবেশবান্ধব হলেও এর ঝুঁকি নিয়ে জনমনে এক ধরনের শঙ্কা আছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এটি আমাদের কৃষি খাতেও অবদান রাখবে বলেও মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক ইন ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. জাহিদ হাসান মাহমুদ।

বাংলাদেশে যেসব পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ বা প্রযুক্তিবিদ তৈরি হচ্ছে রাশিয়ার সরকারকে তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়ারও আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আলোচনায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শামসুল ইসলাম, মঞ্জুর হোসেন খান এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৫
এমএইচপি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।