ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

আগুন সন্ত্রাসের হোতা কারা দেশবাসী জানে: রিজভী 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২২
আগুন সন্ত্রাসের হোতা কারা দেশবাসী জানে: রিজভী 

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত রোববার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে পেট্রোল বোমা দিয়ে অথবা অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে আন্দোলনের নামে। এ সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রেহাই নেই, তাদের রক্ষা নেই।

’ কিন্তু দেশবাসী জানে আগুন সন্ত্রাসের হোতা কারা।  

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  

রিজভী বলেন, জনগণের দল বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। বহু প্রমাণ রয়েছে- আগুন সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগের এমপি ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা। বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সরকার নিজেদের লোক ও গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়েছে। এসব ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। বর্তমানে আবার আগ বাড়িয়ে শেখ হাসিনা অগ্নিসন্ত্রাসের কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রহস্যজনক। বিরোধীদলের আন্দোলন করার সময় আওয়ামী লীগ যে কাজটি করবে সেটাই তারা এখন বলছে। এ কাজ আওয়ামী লীগ বহুবার করেছে। এখন আবার করবে তা আগেই বলে দিচ্ছে।  

তিনি বলেন, দেশবাসীর মনে থাকার কথা ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় আন্দোলন নস্যাৎ করতে ও বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য একদিকে প্রশাসন যন্ত্র অন্যদিকে হাইপার প্রপাগান্ডা চালানো হয় নিখুঁতভাবে। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জা করে যে প্রপাগান্ডা মেশিন বানিয়েছে তার দ্বারাই তারা অসত্য ও মনগড়া কথা বলে যাচ্ছে। ওরা যে নির্দয়-নিপীড়ক তার প্রমাণ- বিএনপির ৩৭ লাখ নেতাকর্মীর নামে এক লাখ সাত হাজার বানোয়াট মামলা দিয়ে তাদের ঘরছাড়া করা হয়।  

রিজভী বলেন,  যারা একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এহেন নির্মমতা করতে পারে তাদের দ্বারাই বাসে আগুন, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে আসামি করা যে সহজ সেটি বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও জানে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নিজেদের সৃষ্ট পুড়ে যাওয়া মানুষের খবর প্রচার করে। আহতদের প্রতি সহানুভূতির চেয়েও  বার্ন ইউনিটকে শুটিং স্পটে পরিণত করাই যেন তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। কারণ আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপাতেই এ বোমা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী সরকার। আর এক্ষেত্রে দলদাস মিডিয়া দিয়ে বানোয়াট সব খবর প্রচার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাস-মিনিবাসে বোমাবাজি কিম্বা আগুন লাগানোর ব্যাপারে অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য ইউটিউবে পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা মরহুম এইচ টি ইমাম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ইউনিক বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা সম্ভব নয়।

রিজভী বলেন, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর বলেছিলেন,  শেখ হাসিনা বলেন ‘খালেদা জিয়া মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। মূলত: হাসিনাই তার লোক দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। ’ আগুন সন্ত্রাসের সমস্ত ঘটনায় যে সরকারের লোকেরাই জড়িত সেটির অতীতে অনেক নজীর রয়েছে, তাদের লোকেরা সেটি স্বীকার করেছেন। বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে চালকসহ ১১ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ জড়িত। সংবাদ সম্মেলন করে নিজ দলের নেতার এ আগুন সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরেন বরিশাল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মইদুল ইসলাম। তার নেতাদের এ কথার কী জবাব দেবেন শেখ হাসিনা?

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।