ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

মনোহরদীতে সাবেক এমপিসহ বিএনপির ২২৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
মনোহরদীতে সাবেক এমপিসহ বিএনপির ২২৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলসহ ২২৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।  

ঘটনার দুই দিন পর মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাতে মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) জহিরুল আলম।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- নরসিংদী জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ, মনোহরদী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুর রহমান সরকার দোলন, সরদার তোফাজ্জল হোসেন লিয়াকত, সারোয়ার হোসেন কানন, সরদার মাহমুদুল হাসান ফোটন, অ্যাডভোকেট হান্নান, মুশফিকুর রহমান, মনির, সরদার শাহজাহান, ছোটন, সরদার মামুন ও সাখাওয়াত হোসেন বকুল।

জানা যায়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম ও জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে মনোহরদী উপজেলার হেতেমদীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। অপরদিকে একই সময় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চন্দনবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দোয়া, মিলাদ ও গণভোজের আয়োজন করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি দু’টি সভা হওয়ায় সহিংসতা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
 
দুপুর একটার দিকে হাফিজপুর গ্রাম থেকে বিএনপির সাবেক এমপি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুর রহমান দোলনসহ জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।  
এসময় মিছিলের সামনের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা ছিল। মিছিলটি কিছুদূর এগুলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় শতাধিক রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
 
সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠানসহ ১০ পুলিশ সদস্য এবং আটজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
এদের মধ্যে আটজন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রয়েছেন- যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ, জেলা ছাত্রদলের সদস্য মনিরুজ্জামান ছোটন, ছাত্রদল নেতা মাহবুব ও মনির। আর আহতদের মধ্যে রয়েছেন, পৌর কমিশনার বাবুল আকন্দ ও মহিলা কমিশনার শামসুন্নাহার।

মনোহরদী থানার ওসি (তদন্ত) জহিরুল আলম বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আমাদের পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও চারটি অবিস্ফোরিত কককেল উদ্ধার করা হয়। তাই মামলার এজাহারে বেআইনিভাবে দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।