ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে শেখ হাসিনাও মেনে নেবেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২২
‘নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে শেখ হাসিনাও মেনে নেবেন’

ঢাকা: নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে শেখ হাসিনাও মেনে নেবেন বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (একাংশ) আয়োজিত ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং আলোচিত জাতীয় সরকার’ শীর্ষক গোলটেবিল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আহ্বান জানিয়েছেন কেউ কেউ বুঝতে না পারলেও সরকার ঠিকই বুঝতে পেরেছে। এ জন্য সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যারা নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকারের কথা বলে মাঠে নেমেছেন তাদের ভাবতে হবে কোনটা সঠিক। তারা তো কোনো রূপরেখা দেননি।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে তো সব দল নিয়ে হয়। আমার তো মনে হয় শেখ হাসিনাও এই জাতীয় সরকার মেনে নেবেন। এটা শেখ হাসিনা মাঠে ছড়াচ্ছে কিনা তাও তো ভাবনার বিষয়। এই সরকারের ১৪ বছরের অপকর্ম, আবার যদি শেখ হাসিনার অধীনেই জাতীয় সরকার হয় তাহলে তিনি তো নোবেল পুরষ্কার পাবেন। সরকারের অতীতের সব অপকর্ম এই জাতীয় সরকার দিয়ে জায়েজ করে নেবে।

যারা নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকারের কথা বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যদি শোনে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই, তাহলে সরকারে থেকে যারা অপকর্ম করেছে তারা পালাবার পথও খুঁজে পাবে না। যারা এখন সরকারের চাটুকারিতা করতেছে তারা তখন আমাদের খুঁজবে। শুধুমাত্র খালি হাতে নয়; উপঢৌকন নিয়ে খুঁজবে। তারা সবাই তখন জ্যান্ত লাশ হয়ে যাবে। ’

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান যে ফর্মুলা দিয়েছেন, তা ট্রাম্পের ওপর ওভার ট্রাম্প। তিনিও বলেছেন জাতীয় সরকার হবে; তবে তা নির্বাচনের পরে। এখন বাজার মন্দা, দিন দিন সরকার ও সরকারের চাটুকারদের দরপতন হচ্ছে।  

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের সবার মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন। বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা (আওয়ামী লীগ) ভোটের রাজ্যে বারবার প্রমাণ করেছে জনগণ তথা ভোটারদের সঙ্গে  প্রতারণা করেছে। এক কথায় তারা প্রতারক। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা লুটপাট করে অর্থনীতিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। উন্নয়নের কথা বলে ৭০ ভাগ টাকা তারা লুট করেছেন, গত ১২ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এই কারণে একের পর এক ভ্যাট, ট্যাক্স ও ইউটিলিটি পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে সরকার। এতে করে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষের আয় কমছে, ব্যয় বাড়ছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে। তারপরও সবাইকে নিয়ে সরকার গঠনের কথা বলেছে বিএনপি। তারেক রহমান ক্ষমতার জন্য ক্ষুধার্ত নন, তিনি বিএনপির নেতৃত্বে দেশটাকে গণতান্ত্রিক ট্রাকে আনতে চান। জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চান। তিনি কতটা ত্যাগ করার মানসিকতা নিয়ে পথ চলছেন। উনি প্রধানমন্ত্রী হবেন-এ কথা তো বলেননি। উনি বলেননি জোট সরকার; উনি বলেছেন জাতীয় সরকার। এই সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে সঠিক ট্রাকে আনবে।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসীর সভাপতিত্বে গোল টেবিল আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, এলডিপির সহ-সভাপতি আবদুল গনি, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির  কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এম এ বাসার, যুগ্ম-মহাসচিব চাষী এনামুল হক, মোড়ল আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ বেলাল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২২
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।