ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সরকার বিদেশিদের পদলেহন করছে: মির্জা ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
সরকার বিদেশিদের পদলেহন করছে: মির্জা ফখরুল

নরসিংদী: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার বিদেশিদের পদলেহন করছে। তারা মানুষের জন্য কাজ না করে নিজেদের স্বার্থে কাজ করছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। 

তিনি বলেন, বিদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। তার সঙ্গে নিজেদের স্বার্থও ঠিক রাখতে হবে।

তবে আমাদের স্বার্থ বাদ দিয়ে অন্যদের স্বার্থ চরিতার্থ করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের মরহুম বাবা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মোমেন খানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকি উপলক্ষে 'আবদুল মোমেন খান স্মৃতি সংসদ'র উদ্যোগে নরসিংদী সিঅ্যান্ডবি রোডের বধুয়া কমিউনিটি সেন্টারে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতের এনআরসি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালের পর এ দেশের মানুষ ভারত কেন যাবে। ভারত আমাদের চেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত না। বরং ভারতের ১০ লাখ মানুষ বাংলাদেশে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ২য় অবস্থানে বাংলাদেশ। তাই স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কোনো নাগরিক ভারতের নাগরিকত্ব নেয়নি।

খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, খালেদা জিয়া গণমানুষের নেতা। তাই এ সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। তিনি কারাগারের বাইরে থাকলে আওয়ামী লীগ এসব অন্যায় ও লুটপাট করতে পারতো না।

বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানাচ্ছে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের সরকার-সরকার করে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ইতো বানিয়েছেন খালেদা জিয়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রের চেতনা, সে চেতনাকে নিয়ে আমরা লড়াই করছি। সেই বাংলাদেশ এখন নেই।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করলে এদেশে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। কারণ গণতন্ত্র এবং খালেদা জিয়া অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি, সেই নেত্রী, যে সারাটাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। লড়াই করেছেন।

বর্তমান সরকারকে অবৈধ সরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিজয় অবশ্যই হবে, বাংলাদেশের মানুষ কখনো কোনো আন্দোলনে পরাজিত হয়নি। আজকে আমরা ন্যায়ের পথে আছি, সত্যের পক্ষে আছি, বিজয় অবশ্যাম্ভী। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার জন্য এ সরকারকে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় সময় পাবেন না।

মোমেন খান প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আবদুল মোমেন খান একজন প্রতিকৃতি। তিনি শুধু নরসিংদীর জন্য কাজ করেননি। তিনি সারা দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। আমাদের সবাইকে তার পথ অনুস্মরণ করে এগিয়ে যেতে হবে।

এসময় প্রধান আলোচক জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন, এ সরকার স্বৈরাচারী সরকার। স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে হলে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে গণআন্দোলন তৈরি করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার বার বার আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ১৯৭৩ সালে এই নরসিংদীতেই আমার মিছিলে নির্বিচারে গুলি করে ৩ জনকে হত্যা করা হয়। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন জে এস ডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান রতন ,মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল, কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রনেতা ফেরদৌস আহমেদ খোকন, সাবেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন মিন্টু, ছাত্রদলের সধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া ইরান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।