ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করবে আ’লীগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৭
নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করবে আ’লীগ

ঢাকা: নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিরোধিতা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি নির্বাচনে ভোট গ্রহণে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করবে দলটি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসি যে সংলাপ করছে আগামী ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেই সংলাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কী কী প্রস্তাব তুলে ধরা হবে সেগুলো তৈরির কাজ চলছে।

তবে প্রস্তাবগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের নেতাদের কাছ থেকে ইতোমধ্যেই কিছু প্রস্তাব এসেছে। এসব প্রস্তাবের একটি খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। এরপর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা এবং মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করা হবে।

আওয়ামী লীগ প্রস্তাবের জন্য যে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে তার মধ্যে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে দূরে রাখতে নির্বাচনে যাতে তাদের ব্যবহার করা না হয় সে প্রস্তাব করা হবে।

এদিকে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আধুনিক ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে যুগোপোযোগী করার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা চালু করে ইভিএম-এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব করা হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিন্ন পোস্টার করা, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ইসির উদ্যোগে একই সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাবও থাকতে পারে। এই সমাবেশে প্রার্থীরা নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। এছাড়া প্রার্থীদের জামানতের টাকা হিসেবে বর্তমানে ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। এই টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই নেতারা জানান, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যুযোপোযোগী করতে আধুনিক বিশ্বের নির্বাচনী পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এটা চিন্তা করেই ইভিএম চালুর প্রস্তাবের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে আগামী নির্বাচনেই ইসি এটি বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে। পরবর্তীতে যাতে নিশ্চিত করা যায় তার ওপর জোর দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সব সময়ই নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামানোর বিরুদ্ধে। কোনো কোনো দলের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং করা হতে পারে। বিশেষ করে বিএনপি সব সময়ই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি করে থাকে। তাই আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন যাতে না করা হয় আওয়ামী লীগ জোরালোভাবে সেই প্রস্তাব তুলে ধরবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব সময়ই নির্বাচনের কাজে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আছে নির্বাচন পরিচালনার কাজে ইসি তাদের ব্যবহার করবে। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এখানে তেমন প্রস্তাবের কিছু নেই। সংলাপের জন্য প্রস্তাবনা তৈরির কাজ চলছে। দলের নেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে। প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করা হবে কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেকজন সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, প্রস্তাবগুলো এখন চূড়ান্ত হয়নি। ইভিএম পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব করা হতে পারে। আগামী নির্বাচনেই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিনা সেটা একটা বিষয়। তবে ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।