ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

হরতালের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১০

ঢাকা: বিএনপির ডাকা আগামী ২৭ জুনের হরতালকে অবৈধ ঘোষণা চেয়ে হাইকোর্টে আজ সোমবার একটি রিট দায়ের করা হযেছে। আজ সোমবার বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং বিচারপতি নাঈমা হায়দারের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে এই রিটটি দায়ের করা হয়।



আজিজুল হক পাটোয়ারী, এম এম ইসলাম এবং মাহবুব আলম চৌধুরী নামে তিন ব্যক্তি এ রিট দায়ের করেন।

রিটে বলা হয়েছে, হরতালে মানুষের জান-মালের ব্যপক ক্ষতি হয়। মানুষের প্রাণহানি ঘটে, অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ অবস্থায় হরতালকে অবৈধ ঘোষণা করা জরুরি।  

এর আগে গত ২৬ মে আগামী ২৭ জুনের হরতাল প্রত্যাহার করার জন্য বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলটির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং আইন সচিবকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে হরতাল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়। নির্ধারিত সময় পার হলেও কোন জবাব না পাওয়ায় আজ রিটটি দায়ের করা হয়েছে বলে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন আজিজুল হক পাটোয়ারী।

খালেদা জিয়াকে দেওয়া ওই নোটিশেও রিটকারীরা বলেন, ‘হরতালের ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হন। দরিদ্র মানুষের জীবিকার ওপর আঘাত আসে। হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়। রিকশাওয়ালা, দিনমজুরদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। হরতালের আগে-পরে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা তাদের খোঁজ নেন না। তাদের কোন সহযোগিতা করেন না। হরতাল চলাকালে সংবিধানে দেওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়। ’

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকে এপর্যন্ত হাইকোর্টে হরতাল নিয়ে বেশ কয়েকটি রিট মামলা দায়ের হয়েছে। এব্যাপারে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু নির্দেশনাসহ আদেশও রয়েছে।

২০০৬ সালের ১১ জুন ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলো আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। কর্মসূচির ঠিক আগের দিন গাজী রবিউল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে অবরোধের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বিশেষ বেঞ্চ ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৩ টায় সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে ১১ জুনের অবরোধ থেকে বিরত থাকার আদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হলেও এ পর্যন্ত তার শুনানি হয়নি। এর ফলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

অপরদিকে ১৯৯৯ সালে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে হরতালের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট হয়। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে  ওই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালত ‘হরতালে উদ্ভুত সহিংসতাকে কেন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না’-এই মর্মে রুল  জারি করেন। রুলের জবাব না আসায় ওই বছরের ১৩ মে বিচারপতি গোলাম রব্বানী এবং বিচারপতি লতিফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ হরতালজনিত সহিংসতাকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ গণ্য করে রায় দেন।

হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি’র তৎকালীন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুইয়া পক্ষভুক্ত হয়ে আপিল করেন। টানা  ৮ বছর পর ২০০৭ সালের  শেষ দিকে  ওই  আপিলের শুনানি শেষ হয়।

২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এম. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই মর্মে একটি আদেশ দেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল আহ্বান করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময় ১৭২৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১০
জেএ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।