ঢাকা, রবিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

রাজনীতি

ভারতে বসে হাসিনা অনবরত যড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে: মাহমুদুর রহমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১১, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
ভারতে বসে হাসিনা অনবরত যড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে: মাহমুদুর রহমান অনুষ্ঠানের মঞ্চে আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানসহ অতিথিরা।

ভারতের আশ্রয়ে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবের দেশীয় ভিলেন শেখ হাসিনা অনবরত যড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ভারতসহ তাদের ডিপস্টেট শেখ হাসিনাকে সমর্থন করছে।

তাদের সমর্থনে ভারত আমাদের স্বাধীনতা, জুলাই বিপ্লব মানতে পারেনি। তাই তাদের যড়যন্ত্র চলমান রয়েছে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএসপিএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব, আঞ্চলিক সম্পর্ক ও গতিপথ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবের লক্ষ্য ও নির্বাচনের শর্ত হলো—বাংলাদেশে যেন আর কোনো ফ্যাসিস্ট সিস্টেম ফিরে না আসে। এজন্য নির্বাচনের আগে অবশ্যই জুলাই সনদকে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি ছাড়া নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগ ভারত যাতে নিতে না পারে, সেজন্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। তবে এই নির্বাচন হতে হবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পর।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর ক্ষমতা দখলের লোভ ও ঐক্যের অভাবে জুলাইযোদ্ধারা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই বিভক্তির সুযোগ নিয়েই ভারত বিপ্লবকে এখনো মানতে চায়নি এবং বাংলাদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করছে।

তরুণ প্রজন্মকে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, তরুণরাই ভারতীয় আধিপত্যের সামনে রুখে দাঁড়াবে। বিশ্ব মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ডের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসলামিক ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে উপযুক্ত পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে হবে।

তিনি মনে করেন, জুলাই বিপ্লবের প্রধান প্রতিপক্ষ দুটি—অভ্যন্তরীণ ফ্যাসিস্ট শাসকশ্রেণি (শেখ হাসিনার রেজিম) এবং বাইরের হেজিমনি ইন্ডিয়া। তার ভাষায়, ভারত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশকে একটি অলিখিত উপনিবেশে পরিণত করেছিল।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভারত-বিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো সরকার প্রধান এভাবে প্রকাশ্যে ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেননি। বিএনপি বা জামায়াতের মতো রাজনৈতিক দলও ভারতের হেজেমনির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় এক্সট্রা থ্রেট আসবে ভারত থেকে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জাল বিস্তার করা জরুরি।

সেমিনারে অন্যান্য বক্তরা বলেন, ১৪ মাস হয়ে গেল, এখনো কোনো সঠিক দিকনির্দেশনা নেই। কিছু অথর্ব লোকেরা রাষ্ট্র চালাচ্ছে। এতগুলো কমিশন গঠন হলেও শিক্ষার জন্য কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি। আমাদের আলোকিত মানুষ হতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।

জুলাই আন্দোলনে সেনাবাহিনী ফ্যাসিস্টদের পক্ষে কাজ করেছে। তারা অন্যায় করেছে, তাদের ভুল স্বীকার করতে হবে। কারণ সেনারা জনগণের সেবক।

তারা আরও বলেন, পুনরায় আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হলে তারা আবার দেশে প্রভাব বিস্তার করবে। তারা ভারতে বসে এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র  চালিয়ে যাচ্ছে।

সেমিনারে সিএসপিএস চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. মো. আইয়ুব মিয়ার সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিজেডএমের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্নেল (অব.) জাকারিয়া হোসেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিবুর রহমান, মেজর (অব.) জামাল হায়দার, সাবেক সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, ড. কবির হাসান, ড. ইউনূস ও ড. মিজানুর রহমান।

ডিএইচবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ