ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

রাজনীতি

দেশকে রক্ষা করতে চাইলে জনগণের জন্য রাজনীতি করুন: গয়েশ্বর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:২৭, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
দেশকে রক্ষা করতে চাইলে জনগণের জন্য রাজনীতি করুন: গয়েশ্বর আলোচনা সভায়

ঢাকা: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদের হাত থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে চান, তাহলে জনগণের জন্য রাজনীতি করুন, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না। যদি নিঃস্বার্থভাবে গণতন্ত্র উপহার দিতে চান, দেশকে একটি জায়গায় আনতে চান, তাহলে আগে নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করুন।

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারবেন।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন (হিউরাফ) আয়োজিত 'জুলাই বিপ্লব এবং আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থা এমন হয়ে গেছে-মুসল্লির চেয়ে ইমাম বেশি। আমরা বোধ হয় সেই অবস্থায় চলে এসেছি। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা একেকজনের একেক রকম। আমার মনে হয়, ৫ আগস্টের পর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। একসঙ্গে থাকলাম, একসঙ্গে জেল খাটলাম, এখন যার যার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য আমরা আগের মতো এক সুরে কথা বলতে পারি না।

ইতোমধ্যে বিএনপিকে ভারতের দালাল বলা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, তারা নতুন করে আবার বৈষম্যের সৃষ্টি করছেন। তাহলে আমরা কী স্বপ্ন দেখেছিলাম, আর এখন আমরা কোন পথে এগোচ্ছি?

তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন, তা লেখা নেই। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ লেখা আছে ৯০ দিন। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যেন অনন্তকাল। যতদিন থাকবে, ততদিন বৈধ! যদি তাই না হয়, একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারের আকাঙ্ক্ষা পূরণে তাদের কেন সময় হয় না? যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনে নির্বাচন করতে পারে, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই বছর লাগে কেন?

তিনি আরও বলেন, মৌলবাদীরা বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। অর্থাৎ, তাদের সঙ্গে থাকলে আপনি বেহেশতে যাবেন, না থাকলে দোজখে যাবেন। অথচ নিজেরা বেহেশতে যাবে কিনা, সে কথাও তারা জানে না। আমি বলব, সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে। আমরা ফ্যাসিবাদের থেকে মুক্তি পেয়েছি, কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িক উগ্র-উন্মাদনার সৃষ্টি হচ্ছে। যার মাধ্যমে মব তৈরি হয়। আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে না রাখতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িকতা ফ্যাসিবাদের চেয়েও দ্বিগুণ কঠিন ও জনবিরোধী। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্তচিন্তা ও প্রতিভার বিকাশ তারা করতে দেবে না।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নেই, অপব্যাখ্যা আছে। এই অপব্যাখ্যার কারণেই মানুষ ন্যায়ের কথা বলতে পারে না। অনেকগুলো দল আছে, যারা ট্রাভেল এজেন্সির মতো বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কার চালু করে দিচ্ছে। বিদেশ থেকে হায়ার করে বুদ্ধিমান লোক আনা হয়েছে। আর এত বুদ্ধিমান লোক এক জায়গায় হলে যা হয়, তাই হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৩১ দফার ভিত্তিতে প্রায় ৬০টি দল একত্রিত হয়েছিলাম ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে। সেই ৩১ দফায় 'পিআর' শব্দটি ছিল না। গণতন্ত্রের জন্য যদি এটা জরুরি হতো, তাহলে আজ যারা 'পিআর'-এর কথা বলছেন, তারা তো ৩১ দফায় মতামত দিয়েছিলেন।

হিউরাফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফাত আলী সফু।

এসসি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।