ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলকে জিতিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। সেজন্য এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ্যানি বলেন, ডাকসুতে আমি প্রতিনিধিত্ব করেছি। আজকে ডাকসুতে ভিপি হিসেবে যে মনোনীত হয়েছে আবিদ, দেখেন আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা কী ছিল; প্রত্যেকটা বক্তব্য, প্রত্যেকটা মিছিল-মিটিং, নেতৃত্ব এবং আমার মনে হয় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্ব পাওয়ার জন্য আল্লাহ আমাদের ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি করে দিয়েছেন। তাকে ডাকসুর ভিপি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটা বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনে তারেক রহমান যেটা চাচ্ছেন, যেটা চেয়েছেন, ডাকসুর ভিপি সেটা দিতে সক্ষম বলে আমি বিশ্বাস করি। সারা বাংলাদেশ আজকে ডাকসুর দিকে তাকিয়ে আছে। ভিপি হিসেবে আবিদকে, জিএস হিসেবে তানভীর বারীকে, এজিএস হিসেবে মায়েদকে, ২৮ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এ্যানি বলেন, ডাকসুতে আমাদের (প্যানেল) জিতিয়ে আনতে হবে, সেজন্য আমাদের এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে। সারা বাংলাদেশের যে যেখানে থাকি না কেন, আমরা যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সৈনিক, জিয়ার সৈনিক এখন থেকে ছাত্রদের জন্য, ডাকসুর প্যানেলের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নেতৃত্বের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা করব, এখন থেকে শুরু করে দিয়েছি।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি আরও বলেন, রাজনীতিতে গুণগত যে পরিবর্তন, তারেক রহমানের বক্তব্যে বোঝা যায়। তারেক রহমান যে কথাগুলো বলছেন, এ কথাগুলার মধ্যে দিয়ে জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, আজকে তারেক রহমান সে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। বিগত ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করার কারণে মানুষ আমাদের সমর্থন দেবে। এটা আমরা সবাই বিশ্বাস করি, কারণ আমরা সবাই ত্যাগী, আমরা সবাই নির্যাতিত, অত্যাচারিত। গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই করেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। বেগম খালেদা জিয়া আজকে যত অসুস্থ হোক, এখনো তিনি আছেন। তার থেকে আমরা মনোবল পাই, সাহস পাই, হিম্মত পাই। এ কারণে আমরা বলতে পারি, আগামী দিনে যে নির্বাচনটা হবে, যে জনগণের সরকার গঠন হবে, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সেই সরকারের নেতৃত্ব দেবে। তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন, নির্বাচন করবেন, করাবেন। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে।
এ্যানি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমাদের কঠিন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। ৫ তারিখ যদি না হতো, হাসিনা যদি এখনো থাকতো, আমি আপনি স্বাভাবিকভাবে এখানে থাকতে পারতাম না। জীবন-যাপন করতে পারতাম না। মিছিল-মিটিং করতে পারতাম না, বসবাস করতে পারতাম না। পালিয়েছিলাম, জেলে ছিলাম, আমাদের নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে, খুনের শিকার হয়েছে। ঢাকাতে আমাদের অনেক ছাত্রকে, সাধারণ মানুষকে, আমাদের কর্মীকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। হত্যা করেও সে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে। কিন্তু আল্লাহতালা তাকে ক্ষমতায় রাখে নাই। আমাদের চেষ্টা ছিল, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট চলে গেছে, ফ্যাসিস্ট দূর হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশটাকে আমাদের নতুন করে গড়তে হবে।
ইছাপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, বিএলডিপির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এল রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য ভিপি আবদুর রহিম, রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক মজু, যুগ্ম আহ্বায়ক জিএস মনোয়ার হোসেন, সাবেক উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন তুর্কি, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মিন্টু, এজিএস আবুল কাশেম, সদস্য আবুল বাশার প্রমুখ।
এমজেএফ