ঢাকা, সোমবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ জুন ২০২৫, ১৯ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল: মিয়া গোলাম পরওয়ার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:০২, জুন ১৬, ২০২৫
জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল: মিয়া গোলাম পরওয়ার

খুলনা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল।

 

তিনি বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরিয়ে দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

রোববার (১৫ জুন) দুপুরে পবিত্র হজ পালন শেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বাড়িতে আসার পথে সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রথমে ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাস্টার মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, পরে ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি মো. আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. ইউসুফ ফকির, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সহ সভাপতি মো. আল আমিন গোলদার, খানজাহান আলী থানা সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুন, ফুলতলা উপজেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, সেক্রেটারি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা সাইফুল হাসান খাঁন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ মো. আলাউদ্দিন, ড. মো. আজিজুল হক, মাওলানা জোবায়ের হোসেন ফাহাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ফুলতলা উপজেলা সভাপতি আব্দুল আলিম শেখ, পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ আল আমিন গাজী, দামোদর ইউনিয়ন আমির ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আহমদ, সেক্রেটারি মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, জামায়াত নেতা আব্দুল জলিল শেখ, এএইচএম শফিউল্লাহ হাজেরী, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।  
  
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামী শাসন দেখার। তাইতো আমাদের আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সব বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণ রাষ্ট্র দেখতে পাবে।  

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, একটি কল্যাণকর ও গণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের শাসন প্রয়োজন। আমাদের স্লোগান হল- ‘জামায়াত আল্লাহর আইন চাই ও সৎ লোকের শাসন চাই। ’ তাই আগামীর সংসদে যদি আল্লাহওয়ালা ও ইসলামপ্রিয় ১৫১ সদস্যকে নির্বাচিত করে পাঠাতে পারে তাহলে বাংলাদেশ সত্যিকারে একটি সোনার দেশে পরিণত হবে। দেশের শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য, বস্ত্রসহ টেকসই উন্নয়ন করা হবে। একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়া হবে যেখানে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করা হবে। যুবকদের লেখাপড়া শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত বেকার ভাতা দেওয়া হবে। তাই আগামী নির্বাচনে ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিয়ে সৎ, আল্লাহভীরু ও ইসলামপ্রিয় সদস্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখুন।  

তিনি আরও বলেন, ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের পরে পথহারা বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ হয়েছে। দুই হাজার ছাত্র-জনতার শহীদ ও প্রায় ৩০ হাজার ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ব বরণের মাধ্যমে নতুন স্বাধীনতা লাভ করা বাংলাদেশে আর যেন কোনো শক্তি ফ্যাসিবাদের জন্ম দিতে না পারে, বৈষম্য তৈরি করতে না পারে, অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন দখলবাজি চাঁদাবজি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যথায় আমাদের এ ছাত্র-জনতার স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাবে।  

বিগত ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এমপি থাকাকালীন সময়ে তার উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমি এমপি থাকাকালীন ফুলতলা-ডুমুরিয়ার সন্ত্রাস নির্মূল ও সুষম উন্নয়ন করা দুটি ওয়াদা ছিল। আমি তখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসী এই জনপদকে সন্ত্রাসমুক্ত করেছিলাম। ৫ বছরে এ বিশাল এলাকার সব উন্নয়ন করা যায় না। তবুও যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি উন্নয়ন করার যা গত ১৫ বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এ এলাকার সমস্যা দূরীকরণে আমি সবসময় সচেষ্ট থাকি। ইতোমধ্যে বিল ডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করেছি। আগামী নির্বাচনে জামায়াত আমাকে আবারও এখানে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে যদি নির্বাচিত করেন তাহলে অতীতের মতো আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে ফুলতলা-ডুমুরিয়ার বাস্তব সম্মত উন্নয়ন করার। বিগত সময়ে আমার হুলকুম দিয়ে যেমন একটি হারাম টাকাও আমার ভিতর ঢুকেনি আগামীতেও হারাম কোনো অর্থ আমার হুলকুমে ঢুকবে না ইনশাআল্লাহ।  

এমআরএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।