ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনের বৈঠকটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে এক উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, লন্ডনের এ বৈঠক বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ছিল।
শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জনতার অধিকার পার্টির উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেই গত জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। জনগণের ভোটার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। গত ১৫ বছর দেশের জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থী ও মার্কাকে ভোট দিতে পারেনি।
ভারতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচনকে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বৈধতা দিয়েছে। সেই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মুখোশধারী গণতন্ত্রের দাবিদার। সেই দেশ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক শক্তি। সেই দেশ সম্পর্কে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় ৬ বছর কারাগারে ছিলেন। এ গণঅভ্যুত্থান না হলে ওনাকে জীবিত ফেরত পেতাম কিনা জানি না, মহান আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজত করেছেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের একটি শুভসূচনা কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের যে সমস্ত গণতান্ত্রিক দল আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, প্রতিটি দলই নির্বাচন চায়। কেউ আগে চায়, কেউ পরে চায়। কিন্তু নির্বাচন চায় না এরকম দল বর্তমানে বাংলাদেশে নেই।
সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমরা উত্তেজিত হচ্ছি। আলাদা পার্টি, আলাদা রাজনীতি ভিন্নতা তো থাকতেই পারে। বাংলাদেশে মধ্যমপন্থী, উত্তর-দক্ষিণ ইসলামপন্থী সব ধরনের দল আছে। কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবাই একমত। নির্বাচনের প্রশ্নে সবাই একমত। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে সতর্ক থাকতে হবে।
গণতন্ত্রের জন্য যারা শহীদ হয়েছে আহত হয়েছেন তাদেরকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে না মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য গত ১৫ থেকে ১৬টি বছর বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতাকর্মীরা শহীদ হয়েছেন, গুম হয়েছেন, জেল খেটেছেন। শুধু বিএনপিরই প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী খুন-গুম এর শিকার হয়েছেন। গত জুলাই আগস্ট আন্দোলনে অনেকে শহীদ হয়েছেন এখনো অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি তাদের এত সহজেই ভুলে গেলে চলবে না। তাদের চাহিদা কি, আকাঙ্ক্ষা কী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ সেই জায়গায় তাদের আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ক্বারী তাহের, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
ডিএইচবি/জেএইচ