ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

ফরিদপুরে নিহত দুই সহোদরের বাড়িতে বিএনপির তদন্ত কমিটি, বিচার দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
ফরিদপুরে নিহত দুই সহোদরের বাড়িতে বিএনপির তদন্ত কমিটি, বিচার দাবি

ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে কালি মন্দিরে আগুন দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনিতে নিহত দুই সহোদরের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা এবং আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।  

এ সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিতকরণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

বুধবার (১ মে) দুপুর ১২টায় মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট এলাকায় নিহতদের বাড়িতে যান বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির নেতারা।

এ সময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তার নেতৃত্বে আমরা আজকে মধুখালীতে এসেছি। আমরা এ রকম ঘটনার বিচার দাবি করি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দেশ। এ দেশের অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকলেও আবহমানকাল থেকেই নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান। এখানে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।  

এসময় নেতারা নিহতের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন ও সমবেদনা জানান। কেন্দ্রীয় নেতারা নিহতদের বাবা-মায়ের হাতে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা সহায়তা করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রামে এখানে আসিনি। ডুমাইনে শ্রমিকদের ওপর যেভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে এরকম ঘটনার জন্ম যেন বাংলাদেশে আর না হয়। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এবং নিহতের পরিবারের যেকোনো আইনি সহায়তায় বিএনপি পাশে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এসময় বিএনপির তদন্ত কমিটির সঙ্গে ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, জাতীয় নির্বাহী কিমটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, আনিচুর রহমান তালুকদারসহ ফরিদপুর জেলা ও মধুখালী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি কালি মন্দিরের প্রতীমায় আগুনের খবর পেয়ে জড়ো হন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজ করা ৭ শ্রমিককে সন্দেহ করেন স্থানীয়রা। পরে স্কুলে গিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে বেঁধে মারধর করা হয়। এতে গুরুতর আহত হওয়ার পরেও শ্রেণিকক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল খান (১৯) ও এরশাদুল খান (১৫) নামে দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ঘটনার পরেই মধুখালীর ডুমাইন ও নোয়াপাড়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন ধর্মমন্ত্রী ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি। এ ছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান, রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমও ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।