ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় চান হাফিজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২৩
বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় চান হাফিজ

ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, ৩১ বছরের রাজনীতি, বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চাই।

বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) সকালে বনানীর নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিজের অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।  

তথ্যমন্ত্রীর হাসান মাহমুদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপির গুরুত্বহীন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে দাবি করি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। রাজনীতি থেকে দূরে অবস্থান করছি। তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়। কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এখন জড়িত নই। শারীরিক কারণে শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেব। ৩১ বছরের রাজনীতি, বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চাই।  

পুলিশের এসকর্ট নিয়ে ৮ বছর পর এলাকায় যেতে পেরেছেন বলে জানান বিএনপির এ নেতা।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৩ বছর আমি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। ড. মোশাররফ ও রফিকুল ইসলাম মিয়া ছাড়া সবাই আমার জুনিয়র। কিন্তু আমি ছাড়া সবাই উপরে উঠে গেছেন। আমি পদবীর জন্য রাজনীতি করি না। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দলে যোগ দিয়েছি।

তিনি জানান, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জুনিয়র নেতারা সিনিয়র পদ-পদবী পেলেও কোনো অভিযোগ নেই। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয় আছি। রাজনীতিতে এখন কোনো আগ্রহ নেই।  

দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেক ভুল আমরা করেছি। দলীয়ভাবে বলার সুযোগ নাই। আট বছর কোনো কাউন্সিল হচ্ছে না। জাতির স্বার্থে কিছু কথা বলতে হয়। দলের সব নেতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কথা বলা। বিএনপিতে সাইফুর রহমান ছাড়া কোনো লোক চোখে পড়েনি। সবাই ইয়েস স্যার, রাইট স্যার বলা লোক ।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বলেন, আগামী নির্বাচনে শারীরিক কারণে অংশ নেওয়া সম্ভব নয় । জনগণের সঙ্গে কথা বলে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার চেষ্টা করব।

মেজর হাফিজ বলেন, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত । কেয়ারটেকারের কথা না ভেবে বিকল্প ভাবা উচিত। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের সক্ষমতা লাগে, তা নেই বিএনপির। বিএনপির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ দুর্বল।

সরকারে সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। জনগণ সুযোগ পেলে সঠিক বিচার করে। ক্ষমতাসীনরা মনে করে, উন্নয়ন কাজে ভোট পাবে। আসলে মানুষ বিচার করে নিত্যপণ্যের দাম আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতায়, শুধু উন্নয়ন কাজে ভোট হয় না।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, অনুগ্রহ করে সামাজিক সম্প্রীতির দিকে লক্ষ্য রেখে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।

পাশের দেশ ভারত দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে। শক্ত ভিত্তির ওপর তাদের গণতন্ত্র। তাদের অনুসরণ করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।  

বিএনপির ও অন্যান্য দলের সঙ্গে বসে সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের অবস্থা খারাপ হলে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল দায়ী থাকবে 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাফিজ বলেন, দলের সংস্কার করতে হবে। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। কেন দলের মধ্যে একনায়কত্ব হচ্ছে, কেন পদবাণিজ্য হচ্ছে প্রশ্ন রাখেন এই নেতা।

হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী আমলাদের পাচার করা টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘ্ণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২৩
টিএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।