ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ঢাকায় বড় শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির

মহসিন হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
ঢাকায় বড় শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির

ঢাকা: গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে এককভাবে বড় শোডাউনের পর এবার যুগপৎভাবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে ঘোষিত দুই দিনের কর্মসূচির মধ্যে ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিল করার পর এবার ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি।

একই সঙ্গে এই কর্মসূচি জামায়াতসহ বিএনপি ঘরানার সব সরকারবিরোধী দল পালন করবে বলে জানা গেছে।  

নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই কর্মসূচি সফল করার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা। ১০ দফা দাবিতে ওই দিন ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৩০ ডিসেম্বর ‘কালো দিবস’ হিসেবে গত কয়েক বছর ধরে পালন করে আসছে বিএনপি।   এবার ওই দিন গণমিছিল থাকায়, এ দিবসটি আলাদা গুরুত্ব বহন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

সব দলকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে চাপে রেখে প্রধানত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করতে চায় বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচিতে আর মাত্র দুই দিন পরই ঢাকার রাজপথে দেখা যেতে পারে সরকারবিরোধীদের। নিজ নিজ দলের ব্যানারে এক এবং অভিন্ন দাবি নিয়ে মাঠে নামবেন বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে ঐকমত্য প্রকাশ করা দলগুলো। মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে সদ্য বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের অন্যতম বড় দল জামায়াতে ইসলামীও। সব দল মাঠে নামার প্রস্তুতি নেওয়ায় ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীতে গণমিছিলকে কেন্দ্র করে বড় শোডাউনেরই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিসহ ১০ দফা বাস্তবায়নে এ গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

এ দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়া সারা দেশে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি পালন করে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। কর্মসূচি পালনকালে বিভিন্ন জেলায় বাধার মুখে পড়ে দলটি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষও ঘটে। পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।

একই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় হামলায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।  

যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারবিরোধী আন্দোলনরত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সমন্বয়ের জন্য বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নিয়ে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে।  

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) এ কমিটি গঠন করা হয়। একই দিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণতন্ত্র মঞ্চ ও এলডিপি লিঁয়াজো কমিটি গঠন করেছে বলে জানায়। এছাড়া সদ্য গঠিত ১২দলীয় জোটও লিঁয়াজো কমিটি গঠন করবে।  

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আমাদের ১২ দলীয় জোটের আজকে (মঙ্গলবার) বৈঠক চলছে। এই বৈঠকে লিঁয়াজো কমিটি নিয়ে আলোচনা হবে। ৩০ ডিসেম্বরের পরে ঘোষণা হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা যুগপৎভাবে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল করবো। ২২ ডিসেম্বর যেদিন ১২ দলীয় জোটের ঘোষণা হয় সেদিনই আমরা জানিয়েছি ৩০ ডিসেম্বর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় আমরা অবস্থান নেবো।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ এ আন্দোলনে সাড়া দিচ্ছে। এই সরকার বিদায় করতে মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। এখানে বিএনপি একা নয়, সাধারণ মানুষও এই সরকারের অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তাই সবাই এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়।

তিনি জানান, ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাবে দেশের মানুষ।

গণমিছিল সফলের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণমিছিল কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই যৌথসভা, সমন্বয় সভা ও প্রস্তুতি সভা করছে। একইভাবে দলের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও পৃথকভাবে প্রস্তুতি সভা করেছে।  

ঢাকায় গণমিছিলে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মিছিলের রুট নির্ধারণের পর শিগগিরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপিকে চিঠি দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।