ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিএনপির সমাবেশে না যেতে শপথ মুসল্লীদের

সিলেটে ঘোষণার দু’দিন আগেই ইজতেমা শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
সিলেটে ঘোষণার দু’দিন আগেই ইজতেমা শুরু

সিলেট: সিলেটে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ৭৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (১৭ ও ১৮ নভেম্বর) দু’দিনব্যাপী নগরীর আলীয়া মাদরাসা মাঠে এই ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয়।

তবে ১৯ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন আলীয়া মাদরাসা মাঠে করায় সেখানে ইজতেমার আয়োজন করা যায়নি। ফলে দু’দিনব্যাপী ওই ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয় দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে।

এদিকে, ঘোষণার দুইদিন আগেই মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) থেকে ইজতেমা মাঠে উপস্থিত হন মুসল্লীরা। তবে বিএনপির গণসমাবেশকে সামনে রেখে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দকে ইজতেমার তারিখ পেছানোর অনুরোধ করে এসএমপি পুলিশ।

এরপরও মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে ইজতেমা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন আমীরে হেফাজত আল্লামা মুফতি মুহা. রশীদুর রহমান ফারুক, পীর ছাহেব বরুনা।  

তিনি মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাতে ইজতেমা মাঠে ‘চার দিনব্যাপী ইজতেমা চলবে’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে মুসল্লীদের বিএনপির গণসমাবেশে না যেতে এই বলে শপথ করান, ‘কও আমরা বিএনপির মাহফিলে কেউ যাইতাম নায়। ’ 

একইসঙ্গে  তিনি ‘আর ইজতেমাতে আপনারা কেউ না থাকলেও আমি একলাই থাকমু’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

মুফতি রশীদুর রহমান ফারুক বলেন, এসএমপির মোগলাবাজার থানার ওসির কথায় প্রথমে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। তিনি ইজতেমাস্থলে এসেই বলেন, আপনাদের প্রোগ্রাম হবেই হবে। কিন্তু নীচু স্বরে বলেন, ১৯ নভেম্বরের পর করেন। তখন বলি, আমরাতো লাখ লাখ টাকা খরচ করে ফেলেছি। আলেম উলামারাও আসতে শুরু করেছেন। এই মানুষদেরও সামাল দেওয়া কঠিন। আমরা আইন মান্য করি। আর আমাদের অনুষ্ঠান ১৯ তারিখ জুমার পর শেষ হয়ে যাবে। এ অবস্থায় পেছানো যাবে না।     

এদিকে, ইজতেমাকে ঘিরে ‘অপ্রীতিকর ঘটনার’ আশঙ্কা থেকে মঙ্গলবার রাতে সংগঠনটির নেতাদের ইজতেমা পেছানোর বিষয়ে এসএমপি কমিশনারের তরফ থেকে অনুরোধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস।

দক্ষিণ সুরমার পারাইরচকের সিলেট কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১৭ ও ১৮ নভেম্বর) এ ইজতেমা হওয়ার কথা ছিল। তবে মুসল্লীরা চলে আসায় মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকেই ৪ দিনব্যাপী ইজতেমার ঘোষণা দেয়া হয়।

এদিকে আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর ইজতেমাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সমাবেশে জনসমাগম বেশি হবে- কয়েকদিন ধরে সিলেটে এমন আলোচনাই চলছিল।

এদিকে ইজতেমা আয়োজনে গত ১২ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ধর্মীয় ও অরাজনৈতিক এ সংগঠনের ৭৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে সিলেটে দুই দিনব্যাপী ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পরপরই শুরু হয়ে পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা ইজতেমা শেষ হওয়ার কথা ছিল।

ইজতেমা আয়োজনের জন্য টার্মিনালে প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরই মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে ইজতেমা পেছানোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইজতেমা পেছানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে অতিরিক্ত উপ কমিশনার সুদীপ দাস বলেন, এমন কোনও তথ্য তার কাছে নেই। মূলত ওই দুই দিনের ইজতেমায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে গোয়েন্দাসূত্রে তথ্য আসে। এরপরই সংগঠনটিকে ইজতেমা পেছাতে বলা হয়।

এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২

এনইউ/এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।