ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩১ বছর পর বাংলাদেশে মা-বাবাকে খুঁজে পেলেন ভারতের নাগরিক জালাল

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
৩১ বছর পর বাংলাদেশে মা-বাবাকে খুঁজে পেলেন ভারতের নাগরিক জালাল

বরগুনা: বরগুনার বামনা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের আব্দুর রব মিস্ত্রির আট বছরের শিশু সন্তান জালাল আহম্মেদকে লেখাপড়ার জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে দেওবন কওমি মাদরাসায় পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকে কিছুদিন পরই হারিয়ে জালাল যায়।

৩১ বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে অবশেষে মা-বাবাকে খুঁজে পেয়েছেন নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ছেলে জালাল।  

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে বরগুনার বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

নিখোঁজ জালাল আহম্মেদ বরগুনার বামনা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের আব্দুর রব মিস্ত্রীর ছেলে।  

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) তিনি ভারতের কর্ণাটক প্রদেশ থেকে সপরিবারে বাংলাদেশে ফিরেন। বর্তমানে তিনি বামনায় মা-বাবার সঙ্গে আছেন। ছেলের সঙ্গে পুত্রবধূ ও তিন নাতিকে পেয়ে খুশির শেষ নেই বৃদ্ধ মা-বাবার।  

জানা গেছে, ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে দেওবন কওমি মাদরাসায় লেখাপড়া করতে গিয়ে আট বছর বয়সে সেখান থেকে হারিয়ে যান শিশু জালাল আহম্মেদ। পরে একটি এতিমখানায় তার লেখাপড়ার সুযোগ হয়। তবে কোনো বৈধ উপায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তার।  

এতিমখানায় কেটতে থাকে বছরের পর বছর। এক সময় সেখানে পড়ালেখা শেষে এতিমখানার পক্ষ থেকে কর্ণাটক রাজ্যের একটি মসজিদে ইমামতি করতে পাঠানো হয় তাকে। ওই রাজ্যের নাগরিকত্বও লাভ করেন জালাল। বিয়ে করেন সেখানকার এক মুসলিম পরিবারে।  

বর্তমানে দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সুখের সংসার কর্ণাটকে। মা-বাবা, স্বজন কিংবা কোনও প্রতিবেশীর ফোন নম্বর না থাকায় গত ৩০ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি।

গত বছরের মে মাসে বামনার স্থানীয় একটি ফেসবুক পেজে জালালের ছেলের ফেসবুক আইডি থেকে জানানো হয় তার বর্তমান অবস্থান। পরে খোঁজ করা হয় তার পরিবারের। গত ২৭ মে খোঁজ মেলে পরিবারের সদস্যদের।

জালালের আহম্মেদের বাবা আব্দুর রব মিস্ত্রি বাংলানিউজকে বলেন, ছেলেটা আমার বুকে ফিরে আসছে। আমি আর কিছু চাই না।  

জালাল আহম্মেদ বলেন, ভারতে পড়াশোনা করতে গিয়ে নিঁখোজ হয়েছিলাম। আমার ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুবাদে ফেসবুকে বামনার একটি পেজের সন্ধান পাই। এরপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। তারাই আমাকে মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।  

স্থানীয় ওই ফেসবুক পেজটির একজন মডারেটর গোলাম রেদোয়ান রাব্বি।  

এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের পেজে জালাল আহম্মেদ যোগাযোগ করেন। তিনি বাংলা ভালো লিখতে না পারায় অনেক কিছুই প্রথমে বুঝতে পারিনি। তবে বাবার নাম ও গ্রামের নাম বুঝেছিলাম। এরপর খুঁজতে খুঁজতে তার মা-বাবাকে পেয়ে যাই।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।