ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩শ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করে ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিলো এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ

  সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
৩শ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করে ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিলো এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ

সিলেট: সিলেট সদরের খাদিমনগর ইউনিয়নের বড়শালা এলাকায় ১৮ একর ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
 
শনিবার (২০ আগস্ট) অন্তত ৩০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করে এই ভূমির নিয়ন্ত্রণ নেয় কর্তৃপক্ষ।

 
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়ে সংশ্লিষ্টরা উচ্ছেদে নামায় তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। অনেকের দোকান বাকি রয়েছে লাখ লাখ টাকা, সেগুলোও আর ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।  
 
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 
তিনি বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভূমির মালিকানা প্রতিরক্ষা বিভাগের ছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ভূমি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। যে কারণে আমরা সেটি দখল বুঝে নিয়েছি। সেখানে সীমানা প্রাচীর তুলে উন্নয়ন কাজ করা হবে। এছাড়া এর বাইরেও নতুন টার্মিনালের জন্য আরও ১৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।
 
ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের বিষয়ে তিনি বলেন, ভুমিটি অবমুক্তির জন্য এর আগে এক ব্যবসায়ী মামলা করেছিলেন। সেটি খারিজ হয়েছে। ফলে তাদের সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল দোকানপাটসহ স্থাপনা সরিয়ে নিতে। নির্ধারিত সময়ে তারা পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে যেতে হয়েছে।
 
এলাকার লোকজন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের ১৯৭৩ সাল থেকে বড়শালা নয়াবাজার চালু হয়। বাজারে প্রায় ৩০০-এর মতো দোকান রয়েছে। এর মধ্যে কাঁচাবাজারের অংশটি সদর উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতো। বাজারের বাকি অংশের মালিকানা প্রতিরক্ষা বিভাগের। ব্যবসায়ীরা প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে ইজারা নিয়ে বাজার পরিচালনা করতেন। সম্প্রতি বাজারের ওই জায়গার নিয়ন্ত্রণভার প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে পায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এরপর কর্তৃপক্ষ এই জায়গা ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
 
বিষয়টি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে জানানো হয়। ব্যবসায়ীরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে এবং বকেয়া টাকা তোলার সুযোগ পেতে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বাজারে তারা সমাবেশও করেন। তবে সিভিল এভিয়েশন থেকে সময় না পেয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। এরপর আজ শনিবার দোকানকোঠা উচ্ছেদে অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ।
 
বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ মুন্না বলেন, বাজারের কাচাবাজার অংশ উপজেলা প্রশাসন থেকে লিজে নেওয়া। লিজের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর অবধি। বাজারের বাকি অংশ (১৪৮৭নং দাগ) প্রতিরক্ষা বিভাগের। আমরা চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ইজারা নিয়ে ব্যবসা করতাম। এখন জানতে পারি প্রতিরক্ষা বিভাগ ভূমির মালিকানা সিভিল এভিয়েশনকে দিয়েছে। ফলে ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। তবে আমরা সময় চেয়েছিলাম। হঠাৎ করে উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।
 
বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিরক্ষা বিভাগের জায়গা ইজারা নিয়ে আমরা ব্যবসা করছিলাম। উচ্ছেদে সময় না দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন সর্বস্বান্ত্ব।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এনইউ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।