ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গার্ডার দুর্ঘটনা: তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
গার্ডার দুর্ঘটনা: তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির তথ্য উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের পরিচালক এস এম ইলিয়াস।

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে। সেটা এখনও আমি পাইনি।  

এ ঘটনায় বিআরটি কর্তৃপক্ষের নিজেদের কোনো দায় আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস বলেন, আমি রাস্তায় আছি। বিস্তারিত প্রতিবেদন পেলে বলা যাবে।

এদিকে বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে এসেছে। সড়ক-মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরি প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরবেন।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরার জসিম উদ্দিন সড়কে বিআরটি প্রকল্পে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের বক্স গার্ডার ওপরে উঠানোর সময় প্রাইভেট কারের ওপর চাপা পড়লে গাড়িতে থাকা আরোহীদের পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার পরপরই বিআরটি কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং রাতের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

তদন্ত কমিটির একাধিক সূত্র ও বিআরটি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কমিটি তাৎক্ষণিক যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে এ দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির চরম গাফিলতি ও অবহেলাকে দায়ী করেছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করতে কমপক্ষে আরও দুদিন সময় লাগবে। যেহেতু বিআরটি কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন চেয়েছিল তাই তদন্ত কমিটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এবং স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এখন কমিটি বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণ এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ক্রেনের ক্যাপাসিটি, ক্রেন চালকের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, চালকের লাইসেন্স আছে কিনা, ক্রেন যেখানে ফিট করা হয়েছিল সে স্থানটি যথাযথ ছিল কিনা এবং সঠিকভাবে ফিট করা হয়েছিল কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

এদিকে বিআরটি প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে ক্রেন চালকের অদক্ষতা ও অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে। যদিও ক্রেন চালককে পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান।

বিআরটি প্রকল্পের নিরাপত্তা যথাযথ নয় বলে স্বীকার করেছেন বিআরটি পরিচালক ও সওজের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান।

তিনি জানান, ক্রেন দিয়ে গার্ডার ওঠানোর সময় সবগুলো লেন বন্ধ করে একটি লেনে গাড়ি চলাচলের জন্য রাখা হয়। কিন্তু সেখানে গাড়ির চাপ বেশি থাকলে যে লেনে গাড়ি চলার কথা না সেখানেও গাড়ি চলে যায়।

‘তাদের যে সেফটির অভাব আছে তা আমি সেদিনও মিটিংয়ে বলেছি। মন্ত্রণালয়ে আমাদের একটা রিভিউ মিটিং হয়েছে যেখানে এডিবির প্রতিনিধিও ছিলেন। সেখানে সেফটি অডিট করার জন্য আমি মিটিংয়ে বলেছি। এটা নিয়ে গতকালও একটা মিটিং হয়েছে। ’

এর আগেও ‘নিরাপত্তার অভাবের’ বিষয়টি তারা ঠিকাদারকে বলেছেন বলে জানান বিআরটির এ পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২ 
এনবি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।