ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩ নদীর মোহনায় দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণ করবে রেল বিভাগ

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
৩ নদীর মোহনায় দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণ করবে রেল বিভাগ

চাঁদপুর: পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল চাঁদপুর শহরের মোলহেডকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ। খুব শিগগিরই ওই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

তার জন্য রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন।

জেলার প্রায় ২৭ লাখ লোকের বসবাস। কিন্তু বিনোদনের জন্য কোনো পার্ক কিংবা পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেনি। মেঘনা নদী উপকূলীয় মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের মধ্যে সবচেয়ে মনোরম ও প্রাকৃতিক পরিবেশ হচ্ছে তিন নদীর মোহনা। ঈদ ও যে কোনো উৎসবে সব লোকজন অল্প সময়ের জন্য হলেও বিনোদনের জন্য এখানে ছুটে আসেন। কারণ তিন নদীর পানি মোহনায় এসে মিলিত হলে যে এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়, সেটি যে কাউকে মুগ্ধ করবে। জেলার বাহিরের ভ্রমণ পিপাসু লোকদেরও একই স্থান পছন্দ। এখানে আসলে একইসঙ্গে দুটি কাজ করা সম্ভব। ভ্রমণ শেষে পাশে থাকা ইলিশের আড়ত দেখা হয়ে যাবে এবং ইলিশ কিনেও নেওয়া যাবে খুব সহজে।

২৬ জুলাই চাঁদপুর স্টেশনের শেষ প্রান্ত মোলহেড অর্থাৎ পার্ক নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেন রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা কানুনগো (লাকসাম) কাউছার হামিদও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মোলহেড আধুনিক, দৃষ্টি নন্দন ও ভ্রমণে আসা লোকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে একটি পার্ক নির্মাণ করা হবে। এতে রেলওয়ের প্রায় কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় হবে। নির্মাণ পরিকল্পনায় ভ্রমণে আসা লোকদের জন্য নিরাপত্তাসহ থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, বাণিজ্যিকভাবে ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে। পার্ক নির্মাণের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি শেষে অনুমোদনের জন্য রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে টেন্ডার আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে পার্ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন হবে।

তিনি বলেন, ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিডিউল বিক্রির মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে আগ্রহী ব্যবসায়ীদেরকে দেওয়া হবে। তারা পরে নিজস্ব অর্থয়ানে ও রেলওয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করবেন। বিশেষ করে পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার জন্যই নির্দেশনা থাকবে।

কাউছার হামিদ আরও বলেন, আগে মোলহেডে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে পার্ক নির্মাণসহ পর্যটনকেন্দ্র করার জন্য প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু রেলের নিয়মানুসারে রেলের সম্পত্তিতে রেলওয়ের নিজস্ব অর্থয়ানে এবং তত্ত্বাবধানে পার্ক নির্মাণ করবে। আর এজন্য চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন এবং চাঁদপুরে সব শ্রেণী-পেশার লোকজনের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। এছাড়া এই পার্কটি নির্মাণ হলে কোনো ধরনের অর্থ ব্যয় অর্থাৎ প্রবেশ টিকিট থাকবে না। সবার জন্য এটি উন্মুক্ত পার্ক হিসেব বিনোদনের জন্য থাকবে। পার্ক নির্মাণ শেষে এটি উদ্বোধন করবেন চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

চাঁদপুরের সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাংবাদিক শরীফ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শহরের ব্যস্ত লোকজন কোথায় গিয়ে সময় কাটানোর জায়গা খুঁজে পায় না। পৌরসভার পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের পার্ক কিংবা বিনোদনকেন্দ্র গড়ে উঠেনি। যে কারণে সব বয়সী লোকজন তিন নদীর মোহনায় ছুটে আসেন। তিন নদীর মোহনা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রূপ ধারন করে। সকালের সূর্যের আলোতে একরকম। দুপুরে আরেক রকম। সূর্যাস্তের সময় খুব চমৎকার রূপ ধারন করে। আর জোৎস্না রাতে চাঁদের মিটি মিটি আলো পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানিতে পড়লে চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ যেন চাঁদের সঙ্গে পানির মিতালী। ওই সময়টা প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা ভ্রমণ অন্যরকম প্রশান্তি সৃষ্টি হয়। আমারও প্রত্যাশা রেল বিভাগ এই স্থানটিকে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য খুব দ্রুত দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।