ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সবার জন্য পেনশন, মন্ত্রিসভায় আইন অনুমোদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
সবার জন্য পেনশন, মন্ত্রিসভায় আইন অনুমোদন

ঢাকা: দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি পেনশন এবং সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনার লক্ষ্যে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, নাগরিকরা ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রিমিয়াম জমা দিলে পেনশন সুবিধা পাবেন। পেনশনাররা (১৮-৬০ বছর) আজীবন পেনশন পাবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় বয়স্ক লোকদের জন্য ৫০ বছরের অধিক কেউ থাকলে বিবেচনায় নেওয়া হবে। পেনশন পেতে কমপক্ষে ১০ বছর নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকার জনগণের বেকারত্ব, ব্যাধি, পঙ্গুত্ব, বার্ধক্য কারণে অভাবগ্রস্ততা এবং দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি পেনশন এবং সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে আইন উপস্থাপন করা হয়েছে।

আইনে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে পেনশনের ভাণ্ডারে ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর বয়সের সব বাংলাদেশি নাগরিক পেনশনে অংশ নিতে পারবেন।

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরাও যদি নিজেদের নাম রেজিস্ট্রেশন করে এবং প্রিমিয়াম দেন তাহলে এই পেনশনে অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যে ব্যক্তি ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত প্রিমিয়াম দেবে তার পেমেন্টে এক রকম হবে, যে ৪০ বছর পর্যন্ত দেবে তারটা এক রকম হবে। প্রিমিয়ামের একাধিক লেয়ার থাকতে পারে। যে বেশি স্কেলের প্রিমিয়াম দেবে তার পেনশন বেশি হবে।

পেনশনারদের কেউ ৬০ বছরে মারা গেলে তার নমিনি পেনশনের সুবিধা প্রাপ্য হবেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

প্রিমিয়ামের পরিমাণ কী রকম হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের মধ্যে প্রিমিয়াম মেনশন করা হবে না। বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে। যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়। কারণ আজকে ২ হাজার টাকা ঠিক করা হলো, ২০ বছর পর ২ হাজার টাকার তো ভ্যালু থাকবে না।

যাদের প্রিমিয়াম দেওয়ার সামর্থ্য নেই তারা কী এই পেনশনের সুবিধা পাবেন না—এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেটা রুলের মধ্যে থাকবে। সেফটিনেট প্রোগ্রামের মাধ্যমে যাদের হেল্প করা হয়, ওটা থেকে রুলের মধ্যে নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন, পেনশনের কোনো টাকা মাইর যাবে না, কেউ ডিসকন্টিনিউ করলে বা মারা গেলে সে যদি প্রিমিয়াম আইনের মাধ্যমে কিছু না পায়, তাহলে রুলের মাধ্যমে নিয়ে আসা হবে।

অনেক বড় বিষয় হলেও পাইলটিং নেই—এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটা প্রায় ১৪/১৫টা দেশের অভিজ্ঞতা নেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে, সেগুলো স্টাডি করা হয়েছে। হাই লেবেল কমিটি কাজ করেছে।

চলতি অর্থবছরে চালু হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটা পাস হোক, তারপর দেখা যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটা লেজিসলেটিভ বিভাগ থেকে সাবজেক্টিভ অনুমোদন করে দেওয়া হয়েছে। এখন লেজিসলেটিভ বিভাগ এটা দেখবে, তারপরে সংসদে চলে যাবে।

একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চারজন সদস্য নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে এবং অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২/আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।