ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানের দিকে ছুটছেন হাওরবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানের দিকে ছুটছেন হাওরবাসী বন্যার কারণে নিজ বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের পানে ছুটছেন দুর্গতরা- বাংলানিউজ

হবিগঞ্জ: কুশিয়ারা ও কালনী নদীর বাঁধ উপচে উজানের পানি ঢুকছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলায়। এছাড়া একটি স্লুইচ গেটসহ নদী তীরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রাম।

শনিবার (১৮ জুন) সকাল থেকে আজমিরীগঞ্জের বদলপুর ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীর স্লুইট গেট ভেঙে পানি ঢুকছে। এছাড়া কাকাইলছেও এবং বদলপুরে বাঁধের অন্তত ১০টি স্থানে ভেঙে গেছে।

বিকেল পর্যন্ত বদলপুর ইউনিয়নের  শ্রীরামপুর, চরহাটি, বাকাহাটি, পিরিজপুর, উত্তর ও পূর্ব পিটুয়ারকান্দি, কাকাইলছেও ইউনিয়নের কাকাইলছেও গ্রাম, রসুলপুর, কামালপুর বাজার, আশ্রয়ন প্রকল্প, সদর ইউনিয়নের রনিয়া, জলসুখা উত্তর আটপাড়া, মোহাম্মদপুর, ঝালহাটি এবং পৌরসভার জয়নগর ও আদর্শনগরসহ অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফলে এসব গ্রামের বাসিন্দারা ঘরে থাকা আসবাবপত্র নিয়ে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। অনেকে উঁচু এলাকা দেখে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ স্থানীয় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন। যাদের যাওয়ার জায়গা নেই; তারা থেকে যাচ্ছেন বাড়ির উঠানে মাছা বানিয়ে।

এদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় নবীগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর ও গালিমপুরসহ আরও অর্ধশতাধিক গ্রামে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে। এসব এলাকার লোকজন নিজেদের গবাদী পশু ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে পানির উপরে বসবাস করছেন।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের সারেং মিয়া বলেন, শুক্রবার (১৭ জুন)  রাতেও তাদের বাড়ি থেকে অন্তত এক ফুট নিচে পানি ছিল। শনিবার দুপুরে ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি হয়ে গেছে। একইভাবে গ্রামের অন্তত ১০০টি পরিবার বন্যা কবলিত হয়েছে।

তিনি বলেন, গবাদী পশু ও ছোট বাচ্চাদের বানিয়াচং উপজেলায় আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশপাশের অন্য পরিবারগুলোও একই প্রস্তুতি নিচ্ছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, গত দুই দিনের মতো আরও দুই দিন পানি বাড়লে বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। একই কথা জানিয়েছেন হিলালপুর গ্রামের ওয়ারিশ মিয়া, সামছুল আলম, তুহেল মিয়াসহ আরও অনেকেই।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার বেশকিছু নতুন সৃষ্টি হওয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিতদের পাশে থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুতির কমতি রাখছে না।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, এরই মধ্যে শুকনো খাবারের প্যাকেট তৈরি করা হয়েছে। বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে সেগুলো পাঠানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আজমিরীগঞ্জে দুইটি বিদ্যালয় প্লাবিত, পাঠদান বিঘ্নিত

                    বাড়ছে পানি, হবিগঞ্জের হাওরবাসীর কপালে চিন্তার ভাঁজ

                    আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে ‘ঠিকানাহীন’ ৫১ পরিবার

                    সুনামগঞ্জে শুকনো খাবার পাঠাল হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন

 

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।