ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে বাধা দিয়েন না: অর্থমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে বাধা দিয়েন না: অর্থমন্ত্রী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে বাধা না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।

শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, যদি টাকা পাচার হয়ে থাকে; সেটা এদেশের মানুষের হক। আমরা এগুলো ফেরত আনার চেষ্টা করছি। সেখানে বাধা দিয়েন না। যদি বাধা দেন তাহলে টাকাগুলো দেশে ফেরত আসবে না।

পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনা কতটা যুক্তি সঙ্গত- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, কে বলেছে টাকা পাচার হয় না। সুটকেসেই হোক, বা অন্য কোনো মাধ্যমেই হোক, ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে টাকা পাচার হচ্ছে। যাতে টাকা পাচার হতে না পারে সে ব্যবস্থাই করছি। জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ অনেক দেশ এ ব্যবস্থা নিয়েছে।

তিনি বলেন, কখনো কখনো মিস ম্যাচ হয়ে যায়, বিভিন্ন কারণে টাকা পাচার হয়ে যায়। টাকা পাচার করে না সে কথা কখনো বলি নাই। যেগুলো বলা হচ্ছে, সেগুলো প্রমাণ ছাড়া বললে মামলায় আসে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, এ মুহূর্তে অনেক অভিযোগ আছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোর্টে মামলা চলছে। অনেকেই সাজা পেয়ে জেলে আছেন। সরকার নিশ্চুপ থাকে না, সরকার তার কাজ করে যাচ্ছে। মিডিয়াতে যদি কিছু রিপোর্ট হয় সেটা নিয়েও আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।

বিশ্বের ১৭টি দেশ অ্যামনেস্টি দিয়ে টাকা ফেরত এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি করেছে। এতে করে যারা ট্যাক্স দিচ্ছেন তাদের সম্মান কমবে না। যে ঘুষ দেয় ও ঘুষ নেয় দুইজনেরই স্থান জাহান্নামে। আমরা জাহান্নামে যাওয়ার জন্য কাজ করি না। আমরা দেশের মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই। তাই দায়বদ্ধতা মমত্ববোধ থেকে কাজ করি। তাই বলছি যদি টাকা পাচার হয়ে থাকে সেটা ফেরত আসবে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি।

কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেখানে আপনারা কতটুকু সফল হবেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কালো টাকা না বলে অ-প্রদর্শিত টাকা বলি। আমরা জায়গা-জমি বেচা-কেনা করি; সেখানে যে দামে কিনি সে পরিমাণ মূল্য দেখাতে পারি না। যে টাকাটা দেখাতে পারি না সে টাকাটা অ-প্রদর্শিত টাকা কিন্তু এ টাকা কালো টাকা হিসেবে বলছি। সে টাকাই আমরা নিয়ে আসতে চাচ্ছি।

মোবাইল, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ এ তিন পণ্যের পার্টস আমদানিতে শুল্ক আরোপ করেছেন এতে পণ্যগুলোর দাম বাড়বে। তাহলে আইটি ক্ষেত্রে কতটুকু সফলতা অর্জন হবে বলে মনে করছেন প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা গত কয়েক বছর থেকে একটি বিষয়ে কাজ করছি সেটা হলো মেড ইন বাংলাদেশ। দুই-তিন দেশের মধ্যে যদি কোনো পণ্য উৎপাদিত হয় তাহলে সেখানে যদি আমাদের উৎপাদনশীলতার লেবেল লাগে সেটা ভালো। যদি মান ভালো হয় ব্যবহার করতে পারি। আমরা সে সব পণ্য উৎপাদনে আরও অগ্রাধিকার দিতে হবে। সে সকল জিনিস বিদেশ থেকে আনবো না। সে বিষয়টি আমরা বাজেটে ফুটিয়ে তুলেছি। দেশের ভিতরে যেসব পণ্য উৎপাদন হবে সেটা দেশ থেকে নিতে হবে। আর সেগুলো যাতে বিদেশ থেকে আসতে না পারে সে বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছি। এভাবেই মেড ইন বাংলাদেশের কনসেপ্ট এগিয়ে নিয়ে যাবো।

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি,  স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমতুন মমিন, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ১০ জুন, ২০২২
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।