ঢাকা: জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধের জেরেই নিজ সেলুনে চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান রুবেলকে (৩১) নির্মমভাবে হত্যা করেন মনির হোসেন (৩০)।
খিলগাঁও থানাধীন সিপাহীবাগ এলাকায় মনির হেয়ার স্টাইল নামে মনিরের সেলুনে গত ১ মে রাত ১১টার দিকে চুল কাটতে যান রুবেল।
হত্যার পর মনির দোকান থেকে বের হয়ে মেরাদিয়া কমিশনার গলি থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে একটি তোশক কিনে দোকানে নিয়ে আসেন। পরে মরদেহটি তার সেলুনে থাকা একটি বস্তায় ভরে ও তোষকে পেঁচিয়ে রাতেই পাশের গলিতে ফেলে দেন।
২ মে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে খিলগাঁও থানা পুলিশ সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলির প্রশান্তি মাদকাশক্তি নিরাময় কেন্দ্রের বিপরীত পাশের গলিতে তোষকে পেঁচানো অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় লোকজন এবং নিহত রুবেলের স্ত্রী শারমিন আক্তার লাশটি শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত রুবেলের মা সুরিয়া বেগম বাদী হয়ে খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তি ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে খিলগাঁও থানা পুলিশ।
শনিবার (৪ মে) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।
পুলিশ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় নিহত রুবেল নানাভাবে মনিরকে হয়রানি করতেন। এমন কি নিজে কাজ না করে মনিরের আয় করা টাকা জোর করে নিয়ে নিতেন। টাকা না পেলে মনিরের দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য করতেন। ফলে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গ্রেপ্তার মনির হোসেন পেশায় নরসুন্দর ও সেলুন মালিক। হত্যায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের তার ও হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, মামলার তদন্তে নেমে খিলগাঁও এলাকার সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত মনিরকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মনির পুলিশকে জানান, রুবেল তার আপন চাচাতো ভাই। ১ মে রাত ১১টার দিকে রুবেল তার সেলুনে চুল কাটতে আসেন। চুল কাটার সময় বিদ্যুতের তারে শক দিয়ে ও পরে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করেন। পরে কমিশনার গলি এলাকার একটি তোষকের দোকান থেকে তোষক এনে মৃতদেহটি সেলুনে থাকা বস্তায় ভরে তোষকে পেঁচিয়ে পাশের গলিতে ফেলে দেন।
আসামি মনিরকে থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৪
এসজেএ/এমজেএফ