ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কেরানীগঞ্জে দুই বছরেও হয়নি খাড়াকান্দী ব্রিজের দু'টি পিলার 

শামসুল ইসলাম সনেট, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
কেরানীগঞ্জে দুই বছরেও হয়নি খাড়াকান্দী ব্রিজের দু'টি পিলার 

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘প্রিন্স মামুন জয়েন্টভ্যাঞ্চার’ কাজের সময় সীমা এক বছর বাড়িয়েও করতে পেরেছে ব্রিজের ২০-২৫ শতাংশ কাজ।

 

বর্ধিত সময় সীমাও শেষ হতে চলেছে চলতি মাসে, তবে কাজের অগ্রগতি বলতে ব্রিজের মাটি বরাবর দু'টি খুটি! তাছাড়া আরও একটি খুঁটির নির্মাণকাজ শুরু করলেও শুধু রড কাঠামো দাঁড় করিয়েই শেষ করেছে সেই কাজ, ফলে নষ্ট হচ্ছে রড, বালু পাথরসহ মূল্যবান জিনিসপত্র।  

এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে আমরা সময় চেয়ে আবেদন করেছি তবে উপজেলা প্রকৌশলী বলছে আমরা প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি বাতিল চেয়ে সুপারিশ করেছি নির্বাহী প্রকৌশলীকে।

 জিডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়নের চর খাড়াকান্দী-হোগলাগাদী রোডের সিংহ নদীর উপর ২০০ মিটার টেইনেজ ৬০.০০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণকাজ প্রিন্স মামুন জয়েন্টভ্যাঞ্চার নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষ করার কথা ছিল ২৭ এপ্রিল ২০২১। ব্রিজটি তৈরির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজার ৪৬২ টাকা। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নদীর এক পাড়ে দুটি খুঁটির কাজ শেষ না করেই কাজ বন্ধ করে চলে যায়। নদীর পাড়ে কাজ করার রড ও অন্যান্য সরঞ্জামগুলো দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। সাধারণ জনগণ শুধুই দিন গুনে যাচ্ছে ব্রিজের কাজ কি কোনোদিন শেষ হবে না! না শুধু স্বপ্নই দেখতে হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন চর খাড়াকান্দী, খাড়াকান্দী পশ্চিম, চর ভান্ডারখোলা, চামারদহ, শামসনগর, মাদানী নগর, চর চামারদহ, কালিগঙ্গার পাড়, হোগলাকাদি, মালিকান্দা, নয়াকান্দাসহ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত রোডটি দিয়ে চলাচল করে। প্রায় তিন বছর আগের পুরানো ব্রিজটি ভেঙে সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিন্স মামুন। কিন্তু নানা অজুহাতে এবং কাজের ধীর গতিতে অতিরিক্ত এক বছর চলে গেলেও কাজের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। সাময়িক চলাচলের জন্য বেধে দেওয়া রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। ভুক্তভোগীদের দাবি দ্রুত শেষ করা হোক ব্রিজের নির্মাণকাজ। অন্যথায় আমাদের পুরানো ব্রিজই ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

নতুন চর খাড়াকান্দী গ্রামের মো. ওয়াসিম জানান, প্রায় তিন বছর আগে পুরানো ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়, কিন্তু এতদিনে কাজের অগ্রগতি বলতে সামান্য দু'টি পিলারের অংশ দাঁড় করাতে পেরেছে তারা। এক বছরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তিন বছরে হয়নি ২০ শতাংশ কাজ। এভাবে চলতে থাকলে আমরা হয়তো ব্রিজ দেখে যেতে পারবো না।

মো. ইসমাইল সিকদার বলেন, প্রতিদিন এই রস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এর মাঝে অনেক অসুস্থ, বৃদ্ধা, অন্তঃসত্ত্বা, শিশু ও চলাচল করে। ব্রিজ ভেঙে যে বাইপাস রাস্তা বানানো হয়েছে তাতে অনেক সময় রিকশা, অটো রিকশা উল্টে যাত্রীরা আহত হয়। তাই দ্রুত কাজটি করা জরুরি।  

এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিন্স মামুন জয়েন্টভ্যাঞ্চারের মালিক বাবর হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছ তারা পুনঃরায় সময় বাড়াতে চেষ্টা করছেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল্লাহ জানান, আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আটবার চিঠি দিয়েছি কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেয়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ব্রিজটি নির্মাণে অতিরিক্ত সময় লাগছে। এক বছর সময় বাড়িয়ে দিয়েও কাজের অগ্রগতি হয়নি, তাই আমরা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি ইস্যু করে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।