ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভোটার তালিকায় দেওয়া বিশেষ শর্ত বাতিলের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
ভোটার তালিকায় দেওয়া বিশেষ শর্ত বাতিলের দাবি

রাঙামাটি: সরকার নির্দেশিত ভোটার তালিকায় হালনাগাদ কার্যক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন) জন্য দেওয়া বিশেষ শর্ত বাতিলের দাবি উঠেছে। একইসঙ্গে হালনাগাদের সময়সীমা বৃদ্ধি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে জেলা শহরের বনরূপা এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে সংগঠনটি সংবাদ সম্মেলনটি করা হয়।

চলতি বছরের ২০ মে থেকে শুরু হওয়া ভোটার তালিকার হালনাগাদের কার্যক্রম চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (৯ জুন) পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সারা দেশের ন্যায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন জেলায় হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় এ কার্যক্রমে নতুন ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পার্বত্য এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে আলাদা কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে।

তারা জানান, স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণে পৌরসভা বা ইউপি চেয়ারম্যানের সনদের বাইরে পাহাড়িদের প্রথাগত নেতৃত্ব হেডম্যান/কারবারির সনদ ও জায়গার সনদ চাওয়া হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখের ও জটিল বিষয় হলো- স্থায়ী বাসিন্দার ক্ষেত্রে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ মানুষের কাছে নিজস্ব জায়গা না থাকায় সে সনদ নেই।

জায়গা না থাকায় পাহাড়িদের প্রথাগত নেতৃত্ব হেডম্যান বা কারবারিরাও এসব বাসিন্দাদের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে প্রত্যয়নপত্র/সনদ দিচ্ছেন না। পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশিরভাগ মানুষ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এ দুটি শর্ত মানতে পারছে না বিধায় তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারছে না। অথচ বাদ পড়তে যাওয়া এ সকল মানুষ ও তাদের আত্মীয়-স্বজন দীর্ঘদিন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছেন।

বক্তারা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বন্দোবস্ত বন্ধ  রেখেছে সরকার। এখানে জমি বেচা-কেনাতেও রয়েছে নানা জটিলতা। এ কারণে এখানে বসবাসরত বাঙ্গালিদের খাস দখলের জমি থাকলেও কোনো রেকর্ডপত্র হাতে নেই। এখানে বসবাসরত বেশিরভাগ বাঙ্গালি হত দরিদ্র ও ভূমিহীন।

এছাড়া, স্থানীয় পাহাড়িদের নেতৃত্ব হেডম্যান/কারবারিরা পাহাড়িদের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের  চাপের মুখে বাঙ্গালিদের স্থানীয় বাসিন্দার প্রত্যয়ন পত্র দিতে রাজি হচ্ছেন না। এ অবস্থায় চলমান ভোটার তালিকা হাল নাগাদ কার্যক্রমে নতুন করে বহু বাঙ্গালি বাসিন্দা ভোটার হওয়ার মতো নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর দাবি, চলমান ভোটার তালিকা হাল নাগাদ কার্যক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা করে দেওয়া শর্ত বাতিল, হাল নাগাদ কার্যক্রমের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। না হলে ভোটার হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত পার্বত্যবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. শাব্বির আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মো. সোলায়মান, যুগ্ম সম্পাদক মো. আবু বকর সিদ্দীক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. হাবিব আজম, ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদা আক্তারসহ অন্যান্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।