ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শাক বিক্রি করে চলা বৃদ্ধ দম্পতির পাশে দাঁড়ালেন ডিসি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
শাক বিক্রি করে চলা বৃদ্ধ দম্পতির পাশে দাঁড়ালেন ডিসি

বরিশাল: শাক-পাতা বিক্রি করে সংসার চালানো বৃদ্ধ দম্পতির সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসীম উদ্দীন হায়দার। এর আগে মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে ওই দম্পতিকে দেখতে নগরের চৌমাথা এলাকায় তাদের খুপরি ঘরে যান তিনি।

এসময় ডিসি)জসীম উদ্দীন বৃদ্ধ দম্পতি হাসিনা বেগম ও মোতালেব হাওলাদারকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। পাশাপাশি তাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মুজিববর্ষের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল-মামুন তালুকদার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ।

জানা গেছে, বরিশাল নগরের রাত্রিকালীন বাজার চৌমাথায় শাক-পাতা বিক্রি করে সংসার চালান হাসিনা বেগম ও মোতালেব হাওলাদার। ৪০ বছর আগে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ডেবরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তারা। সুগন্ধা নদীতে ভিটেমাটি বিলীন হয়ে গেলে পাড়ি জমান বরিশালে। সেই থেকে বরিশাল নগরে মোতালেব হাওলাদার রিকশা মেরামতের কাজ করতেন। বছর সাতেক আগে তিনি স্ট্রোক করে চলাচলের ক্ষমতা হারান। আর একমাত্র ছেলে বিয়ে করে থাকেন শ্বশুরবাড়ি ঝালকাঠিতে। ফলে সংসারের হাল ধরেন স্ত্রী হাসিনা বেগম। তিনি নগরের চৌমাথা বাজারে কচুর লতি, কলমি শাক, থানকুনি পাতা, হেলেঞ্চা শাক ইত্যাদি ভাগা দিয়ে বিক্রি শুরু করেন। যা দিয়ে চলে এ বৃদ্ধ দম্পতির সংসার।

হাসিনা বেগম জানান, তিনি প্রথম দিকে চৌমাথা বাজারে আসতেন কাজের আশায়। দোকানের ফাই-ফরমাশ খেটে সামান্য যা কিছু পেতেন, তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে সংসার চলত। পরে তিনি শুরু করেন শাকপাতা কুড়িয়ে বাজারে বিক্রির কাজ। প্রতিদিন সকালে পান্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়েন প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে। দুপুরে কোনো কোনো দিন বানরুটি খান। দিনভর শাক-পাতা সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় ফেরেন। এরপর সেগুলো নিয়ে যান চৌমাথা বাজারে। যেদিন দুপুরে খেতে পারেন না, সেদিন বাজারে এসে চা-বিস্কুট খান। শাক-পাতা বেচে দিনে তার ১৫০-২০০ টাকা আয় হয়। বেচা-বিক্রি শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে বাজে রাত সাড়ে ১১টা। তারপর রান্না করেন, খাওয়ার পর্ব সারেন। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে হাসিনা বেগম থাকেন সিঅ্যান্ডবি রোডের চৌমাথা পুলের দক্ষিণপারের একটা বাড়িতে। স্থানীয় এক ব্যক্তি তাদের বিনা ভাড়ায় থাকতে দিয়েছেন। বাড়িটা দেখাশোনা করেন তারাই। ছোট্ট টিনের ঘরে আছেন ২০ বছর ধরে।

বাংলাদেশ সময়:১৬৫০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।