ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশালে দুর্ঘটনা 

হাসপাতালে মা, জানেন না ছেলে আর নেই   

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
হাসপাতালে মা, জানেন না ছেলে আর নেই    হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আঁখি বেগম

বরিশাল: মা আর ছোট বোনের সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন আরাফাত হোসেন হাওলাদার (৯)। বেড়ানো শেষে আবার তাদের সঙ্গেই ঢাকা থেকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার মানপাশা গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসছিল।

তবে বরিশালের উজিরপুরে সড়ক দুর্ঘটনার পর আরাফাত বাড়ি ফিরতে না পারলেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার মা আর ছোট বোন।  আরাফাত এরইমধ্যে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছে।

নিহত আরাফতের মামা মেহেদি হাসান বলেন, গত সপ্তাহে আঁখি বেগম(২৫) তার মামা শ্বশুরের বাসায় ঢাকাতে বেড়াতে গিয়েছিল। তার সঙ্গে মেঝ ছেলে আরাফাত ও তিন বছরের শিশু কন্য মরিয়মও ছিলো। প্রায় এক সপ্তাহ সেখানে থাকার পরে শনিবার (২৮ মে) দিনগত রাতে রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যমুনা লাইনের বাসে চেপে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন আঁখি।

তিনি বলেন, সকালে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি বাস দুর্ঘটনার খবর। এরপর উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নিহত আরাফাতের মরদেহ শনাক্ত করি এবং শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখি বেগম ও ভাগ্নি মরিয়মকে দেখতে পাই।

তিনি বলেন, বোন ও ভাগ্নিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেখে আজ মাগরিব নামাজের পরে জানাযা শেষে আরাফাতের মরদেহ দাদাবাড়ির পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করেছি।  

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বারবার ছেলেকে খুঁজছেন আঁখি বেগম। স্বজনরা আরাফাত ভালো আছেন বলে তাকে মিথ্যা শান্তনা দিয়ে রেখেছেন। কারণ তিনি ছেলেকে দেখতে চান।

আঁখি বেগমের সঙ্গে থাকা তার মা মাহিনুর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, কীভাবে ওকে(আঁখি) জানাই আরাফাতা মারা গেছে। তার মৃত দেহ নিয়ে বাড়ি গেছে সবাই।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার মানপাশা গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা ওমান প্রবাসী মনির হাওলাদারের স্ত্রী আঁখি বেগম। আঁখি-মনির দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান ছিল। রোববার (২৯ মে) ভোর ৫টায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের উজিরপুরে সড়ক দূঘটনায় আঁখি বেগমের মেঝ ছেলে আরাফাত আবদুল্লাহ্ নিহত হন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত আঁখি বেগম বলেন, বাসের ডানপাশের সামনে তিন-চার সারির পরে দুই সিট নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। আরাফাত আমার ডানপাশে ছিল। আমি মেয়েকে নিয়ে তার বাম পাশের সিটে বসা ছিলাম। ঘটনার সময়ে কিছুটা ঘুমের মধ্যে থাকায় কি হয়েছে বলতে পরবো না। সজোরে ধাক্কা লাগায় ঘুম ভেঙে দেখি ছেলে আমার পাশে নেই। বাসের ভেতর থেকে আমাদের বের করে এনে হাসপাতালে নিয়ে আসে কারা যেন। কিন্তু আমি ছেলেকে দেখতে পাচ্ছি না।  

উল্লেখ্য, রোববার( ২৯ মে) ভোরে বরিশালের উজিরপুরে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২

এমএস/ইআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।