ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বন্যার আগেই ভাঙন, নদীগর্ভে ১০ বসতবাড়ি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
বন্যার আগেই ভাঙন, নদীগর্ভে ১০ বসতবাড়ি

গাইবান্ধা: বন্যার আগেই বাঙ্গালী নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গেল এক সপ্তাহে অন্তত ১০টি বসতবাড়ী বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে।

এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বামনহাজরা গ্রামের মানুষ।  

গেল বর্ষায় এই গ্রামের একই পরিবারের চার বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে লুৎফর রহমান ও বদিউজ্জামান নামে দুজনের কবর ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে নদী গর্ভে।

এ খবরে সোমবার (১৬ মে) দুপুরে বামনহাজরা গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউর রহমান।

এ সময় ইউএনও আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ আজ থেকেই প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।

মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান জানান, গত এক সপ্তাহের ভাঙনে বামনহাজরা গ্রামের মানচিত্র বদলে যেতে শুরু করেছে। দিন-রাত, প্রতিক্ষণই নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, ভিটেমাটি ও কবরস্থান। অসময়ের হঠাৎ ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দেওয়ানতলা রেলসেতুর পূর্বপাশে অবস্থিত এ গ্রামে কখনও নদী ভাঙনের আশঙ্কা ছিল না। ওই সেতুটিই গ্রামের রক্ষাবাঁধ হিসেবে কাজ করতো। কিন্তু কয়েক বছর আগে রেলসেতুর কিছুটা উজানে দেওয়ানতলা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়।

এ সেতুটির কারণে কয়েক বছর ধরে বামনহাজরা গ্রামে নদী ভাঙনের সূত্রপাত হয়েছে। এছাড়া কয়েক বছর ধরে নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে।

এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বিশালাকৃতির ড্রেজার দিয়ে নদী খনন করা হয়। এতে নদীর অপর পাড়ের ডান তীরে খননের কাজ শুরু হতেই বিপর্যয়ের শুরু হয় এখানে। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বালুর স্তুপ ও ড্রেজার এক ধরনের বাঁধে রূপ নিয়ে উল্টো দিকের এই গ্রামে তীব্র ভাঙনের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলেও জানান তারা।

ওই গ্রামের বাসিন্দা মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান জানান, গত বর্ষা মৌসুমে এ গ্রামের একই পরিবারের চার মুক্তিযোদ্ধার দুইজনের কবরই তলিয়ে গেছে বাঙ্গালী নদীতে। প্রশাসনের কাছে অনেক আবেদন করেও গ্রামটির ভাঙন প্রতিরোধে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বছর বর্ষা আসার আগেই গত এক সপ্তাহে গ্রামের অন্তত ১০টি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। কিছুটা স্বচ্ছল পরিবারগুলো অন্যত্র বাড়ি সরিয়ে নিলেও অসচ্ছল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ভিটেমাটি হারিয়ে একরকম পথে বসেছে। ভাঙনরোধে বর্ষা মৌসুমের আগেই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে গ্রামটির পাশাপাশি দেওয়ানতলা রেলসেতুটিরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
এফআর/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।