ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শয্যাশায়ী মাকে দেখতে পারলেন না বাসুদেব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
শয্যাশায়ী মাকে দেখতে পারলেন না বাসুদেব

গোপালগঞ্জ: শয্যাশায়ী মাকে দেখতে পারলেন না ডা. বাসুদেব সাহা। অসুস্থ মাকে দেখার জন্য শনিবার (১৪ মে) সকালে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে গোপালগঞ্জে উদ্দেশে রওনা হন বারডেম হাসপাতালে এই চিকিৎসক।

কিন্তু বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে থাকতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী শিবানী সাহা, ছেলে আহসানাউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিপলী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র স্বপ্নীল সাহা ও প্রাইভেটকার চালক ঢাকার আদাবর থানার দোয়ারী এলাকার আ. রশিদ মিয়ার ছেলে মো. আজিজ মিয়া না ফেরার দেশে চলে যান।  

এ ঘটনায় খবর ডা. বাসুদেব সাহা গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসায় পৌঁছানোর পর পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। চলছে শোকের মাতম। খবর পেয়ে ওই চিকিৎসকের বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা তার বাড়ি ভিড় করেছেন। তবে, এখন পর্যন্ত ডা. বাসুদের সাহার মাকে ছেলের মৃত্যুর খবর দেয়া হয়নি। তার বাবা সাবেক কমিশনার প্রফুল্ল কুমার সাহা ও স্বজনরা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছেন। শোকে নির্বাক হয়ে গেছে বাবা প্রফুল্ল কুমার সাহা। সর্বশেষ ফেরিতে পরিবারের সঙ্গে ছবি তুলে স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন তিনি।  

ডা. বাসুদেব সাহার বাবা প্রফুল্ল কুমার সাহা বলেন, ‘ওর মা শয্যাশায়ী। অসুস্থ মাকে দেখার জন্য বাসুদেব সকালে ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারেকরে গোপালগঞ্জে আসছিলেন। আসার পথেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন সে বলেছিল অল্প সময়ের মধ্যে চলে আসবে। এর কিছুক্ষণ পর বাসুদের মেয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নি চিকিৎসক শর্মি সাহা আমাকে ফোন দিয়ে জানান ভিডিও কলের মাধ্যমে তার মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কথা বলার মধ্যে একটি বিকট শব্দে ভিডিও কল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে সে আর তার মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এই কথা বলে সে আমাকে খবর নিতে বলেন। এরপর আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নেই। তখন জানতে পারি এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কথা। পরে ওর মেয়ে শর্মি সাহাকে গোপালগঞ্জে আসতে বলা হয়। ’

ডা. বাসুদেব সাহার বাল্যবন্ধু এম বদরুল আলম নাছিম বলেছেন, বাসুদেব ছোট বেলা থেকে খুবই মেধাবী ছাত্র ও ক্রীড়াবীদ ছিলে। অনেক ভাল ফুটবলও খেলতেন। মানুষ হিসেবে তার মতো ভাল মানুষ পাওয়া যাবে। তার কর্মস্থলে গোপালগঞ্জ থেকে কোনো মানুষ গেলেই সেসব কাজ ফেলে তার সঙ্গে কথা বলতেন এবং চিকিৎসা সেবা দিতেন। অনেক আন্তরিক ছিলেন তিনি। তার এ অকাল মৃত্যুতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো আমাদের।

প্রতিবেশি তুষার কান্তি বিশ্বাস বলেন, মহাসড়কের ওপর ধান মাড়াই করার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক অমূল্য সম্পদ। আজকের দুর্ঘটনাও সড়কের ওপর ধান মাড়াই করার কারণে ঘটেছে। আমরা এ ঘটনার প্রতিকার চায়। যাতে আর কোনো জীবন অকালে ঝরে না যায়।

শ‌নিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা এলাকায় বাস-প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই প‌রিবারের ৫ জনসহ ৯ জন নিহত হন। এতে আহত হন আরো অন্তত ২৫ জন।  

আরও পড়ুন
>>> গোপালগঞ্জে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নিহত ৮

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।