ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শরণখোলায় নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে ফাটল, জনমনে আতঙ্ক

এস.এস শোহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
শরণখোলায় নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে ফাটল, জনমনে আতঙ্ক

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অশনির আঘাত হানার আগ মুহূর্তে এই ফাটলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা।

 

বুধবার (১১ মে) দুপুরে শরণখোলা উপজেলার গাবতলা বাজার সংলগ্ন বেড়িবাঁধের মাঝে ১৫-২০ ফুট লম্বা ফাটল দেখা যায়। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ফাটলের স্থানে জড় হতে থাকে। এর আগে, ফেটে যাওয়া এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা গাবতলা গ্রামের ছফেদ খানের ১০ কাঠা জমি গাছপালাসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

জমি হারানো ছফেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধের বাইরে আমার এক বিঘা (৬৫ শতক) জমি রয়েছে। বুধবার দুপুরের আগ মুহূর্তে হঠাৎ করে ১০ কাঠা জমি দেবে যায়। পরবর্তীকালে আস্তে আস্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় আমার জমি। বাকি জমিতেও ফাটল রয়েছে। যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এভাবে বাপ-দাদার অনেক জমি হারিয়েছি আমরা।

এদিকে নির্মাণাধীন বাঁধের মধ্যে মাটি না দিয়ে বালু দেওয়ায় এমন ফাটল ধরেছে বলে দাবি করেছেন জন প্রতিনিধি ও এলাকাবাসী।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শরণখোলা উপজেলাকে রক্ষার জন্য একটি টেকসই বেড়িবাঁধ আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। সরকার বরাদ্দও দিয়েছিল। কিন্তু ইচ্ছেমত কাজ করেছে ঠিকাদাররা। যেখানে মাটি দেওয়ার কথা সেখানে বালু দিয়েছে। যার ফলে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। অতিদ্রুত ফাটলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে শতশত মানুষের জমি ও বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

শরণখোলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-ই আলম সিদ্দিকি বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি। বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিইআইপি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। বৃহস্পতিবার সকালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সিইআইপি প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, শুনেছি বেড়িবাঁধের একটি জায়গায় ফাটল ধরেছে। সকালেই আমদের লোকজন ঘটনাস্থলে যাবে। যতদ্রুত সম্ভব ফাটলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর এই দিনে সুপার সাইক্লোন সিডরের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাগেরহাটসহ উপকূলীয় কয়েকটি জেলা। সরকারি হিসেবে এই দিনে প্রায় ৯০৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সিডরের আঘাতে। আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল কয়েকশ’ কোটি টাকার। স্বজন হারানো বেদনা ও আর্থিক ক্ষতি ভুলে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জবাসীর একমাত্র দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। গণ মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার ২০১৫ সালে ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি)’ নামে একটি প্রকল্পের অধীনে মোরেলগঞ্জ থেকে শরণখোলা উপজেলার বগী-গাবতলা পর্যন্ত ৬২ কিলোমিটার টেকসই বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। এই বেড়িবাঁধের প্রায় ৫৮ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।