ঢাকা: রাশিয়ার প্রযুক্তি ও তত্ত্বাবধানে তুরস্কে নির্মাণাধীন প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আকুইয়ু এনপিপি’র প্রথম ইউনিটের জন্য প্রয়োজনীয় কুলিং ওয়াটার সরবরাহের লক্ষ্যে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে নির্মিত হচ্ছে বিশেষ স্থাপনা।
এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি নিষ্কাশন চ্যানেল ও সাইফুন কূপের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশের রূপপুর এনপিপির মতো তুরস্কের এ প্রকল্পও রোসাটম বাস্তবায়ন করছে।
রোসাটম জানায়, কন্ডেনসার এবং অন্যান্য শীতলীকরণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত পানি সাইফুন কূপে এসে জমা হয়। এখানে পানির মিশ্রণ ঘটে এবং তাপমাত্রা স্থিতিশীল হওয়ার পর নিষ্কাশন চ্যানেলে পাঠানো হয়। সাইফুন কূপ নির্মাণে ব্যবহৃত হবে ১৭, ৬০০ কিউবিক মিটার কংক্রিট মিশ্রণ। অন্যদিকে ৯৫০ মিটার দীর্ঘ নিষ্কাশন চ্যানেল নির্মাণে প্রয়োজন পড়বে ৪০,০০০ কিউবিক মিটারেরও বেশি কংক্রিটের মিশ্রণ। উল্লেখ্য, প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটে সাইফুন কূপের নির্মাণকাজ সমান তালে এগিয়ে চলছে।
আকুইয়ু নিউক্লিয়ারের প্রধান নির্বাহী আনাস্তাসিয়া জ্যোতিয়েভা বলেন, উচ্চ প্রযুক্তির জটিল এই উপকূলীয় স্থাপনা তুর্কি এবং রুশ বিশেষজ্ঞদের অনন্য নকশায় নির্মিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে এনপিপি’র থার্মাল এবং মেকানিক্যাল সকল যন্ত্রপাতির জন্য প্রয়োজনীয় কুলিং ওয়াটার নিশ্চিত হবে। যে লবণাক্ত সমুদ্রের পানি রিয়্যাক্টরে সরাসরি ব্যবহার করা হয় না। লবনমুক্ত পানি টার্বাইনের কন্ডেনসারে প্রবেশ করে সেকেন্ডারি সার্কিটের বাষ্পকে শীতল করবে কিন্তু রেডিয়েশন দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
সমুদ্রের পানি ব্যবহার করে আকুইয়ু এনপিপি’র মূল যন্ত্রপাতি শীতলীকরণের জন্য এই হাইড্রোলিক স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। এই স্থাপনার অংশ হিসেবে একটি ওয়াটার ইনটেক ব্যবস্থা থাকবে যা প্রতি সেকেন্ডে ৩৩৪ কিউবিক মিটার পানি সরবরাহ করবে। এটির নয়টি কংক্রিট নির্মিত চ্যানেল ও একটি জলাধার থাকবে। এনপিপি’র শীতলীকরণ ব্যবস্থায় ব্যবহারের পর ১০টি ফাইবার গ্লাস দ্বারা নির্মিত চ্যানেলের সাহায্যে পানি আবার সমুদ্রে ফিরে যাবে। প্রতিটি পাইপের ব্যাস হবে ২-৪ মিটার এবং পাইপগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে ১০ কিলোমিটার।
যেহেতু এনপিপি’তে প্রথম সার্কিটের পানি (রেডিয়েশনযুক্ত) সেকেন্ডারি সার্কিটের সংস্পর্শে আসতে পারে না, সেহেতু সমুদ্রে নির্গত পানিতে কোনো রেডিয়েশন থাকার সম্ভাবনা নেই।
আকুইয়ু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৪টি ইউনিট নির্মিত হবে। প্রতি ইউনিটে থাকবে একটি করে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর। বর্তমানে প্রকল্পটি ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী মেরিন প্রদেশে বাস্তবায়নাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২২
এসকে/এনএসআর