বরিশাল: মুসলমানদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল ফিতর প্রিয়জনদের সঙ্গে উদযাপন করতে রাজধানী থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ।
তাই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল মুখী মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চগুলোতে স্বাভাবিক দিনের থেকে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুন।
নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে থেকে যাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকা ত্যাগ করতে শুরু করে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের নানান রুটে যাত্রীরা, যার মধ্যে বেশিরভাগ যাত্রীই নৌপথে লঞ্চযোগে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
ধারাবাহিকতায় মধ্যরাত থেকে বরিশাল নদী বন্দরে লঞ্চগুলো এসে পৌঁছালে, সেখানে বেড়ে যায় যাত্রীদের ভিড়। এককথায় যাত্রীদের পদচারণায় মাঝরাতেই কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠে বরিশাল নদী বন্দর।
নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষে তথ্যানুযায়ী শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) মাঝরাত থেকে ঘরমুখো মানুষদের নিয়ে বরিশালে ৫টি ভায়া রুটের ও ১১টি সরাসরি রুটের লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে এসে পৌঁছায়।
ভায়া রুটের ৫টি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রী নামিয়ে পরবর্তী স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। আর সরাসরি রুটের লঞ্চগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এর প্রথম দিনের স্পেশাল সার্ভিসে কোন ধরনের কোন বিপত্তি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ'র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক মো. কবির হোসেন।
এদিক লঞ্চ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্টাফরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও স্পেশাল সার্ভিসে নিয়মানুযায়ী পরিচালনা করা হচ্ছে।
আর নদী বন্দর ও ঘাটগুলোতে নামিয়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বরিশাল নদী বন্দরে এরইমধ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাব-৮ এর পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। সেই সঙ্গে নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে নদীবন্দরে চালানো হচ্ছে সচেতনতামুলক প্রচারনা।
পারভেজ নামে ঢাকা থেকে আগত এক লঞ্চযাত্রী জানান, যাত্রীদের ভিড় শুরু হলেও যতটা হওয়ার কথা থাকে এমন সময়ে তা হয়নি। তবে যে যাত্রী হয়েছে তাতেই কেবিনের বাহির বারান্দায়ও দাঁড়ানো যায়নি। আর ডেকেও ছিল পর্যাপ্ত যাত্রী।
অপরদিকে বরিশাল নদী বন্দরের আশপাশের এলাকায় মধ্যরাত থেকেই বিভিন্ন ধরনের যাত্রীবাহি যানবাহন নিয়ে চালকরা অবস্থান নিয়েছে। স্বাভাবিকের থেকে ভাড়া বেশি হলেও যাত্রীরা অন্ধকার থাকতেই সেসব যানবাহনে চেপে পরবর্তী গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চগুলো ৫ টার পর থেকে যাত্রা শুরু করার কথা থাকলেও সেগুলোতে যাত্রীরা আগেভাগেই অবস্থান নিয়েছেন।
পাশাপাশি মধ্যরাতে লঞ্চ থেকে নেমে হয়রানি রোধে পল্টুন ও নদী বন্দর ভবনের সামনে যাত্রীদের জন্য বসার ব্যবস্থা ও ছাউনি করা হয়েছে। একই সঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিক্যাল টিম ও সেচ্ছাসেবক হিসেবে ছাত্রলীগের কর্মীরা কাজ করছে। যে বাসগুলো লঞ্চে আসা যাত্রীদের নতুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি নদী বন্দরের সামনের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলেও নেওয়া হয়েছে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
এমএস/এনএইচআর