ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা 

সাগর ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা 

সাভার (ঢাকা): ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীসহ আশে পাশের এলাকার মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করবে আর কিছু দিন বাদেই৷ আর এই যাত্রায় দেশের উত্তর-পশ্চিম দিকের ঘরমুখো বেশিরভাগ মানুষই বেছে নেয় ঢাকা-আরিচা অথবা টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়ক।

প্রতিবারেই এই দুই সড়কের ঈদ যাত্রা শুরু হতেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এবারও সড়ক দুটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ থাকায় ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথে যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।  

সরজমিনে সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকালে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়া বাজার থেকে বাইপাইল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে ছোটো বড় খনাখন্দ রয়েছে। বেরিয়ে পড়েছে ইটের খোয়া ও বালু–পাথর। জমে আছে পানিও। সেই সঙ্গে জামগরা ও ইউনিক এলাকায় সড়কের পূর্ণ সংস্কার না করায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, পিচ ঢালাই নেই অনেক জায়গায়। এছাড়া সড়কের দুই পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় সড়কে কারখানার পানি উঠে পানি-কাদায় একাকার সড়কটি। এতে সড়কে চলাচলরত যানবাহন ধীর গতিতে চলছে। এখনই ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই সড়কে প্রতিদিন ইট, বালু আর সুরকি ফেলে গর্ত ভরাটের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একটু পরেই আবার আগের মতো হয়ে যায়। আর বৃষ্টির পানি না থাকলেও সড়কের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে কারখানার পানি। ফলে যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে।

সড়কটি পাশে সেফ হেলমেট হাউস নামের একটি দোকানের মালিক কাউসার আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। এছাড়া সামনে ঈদ আসছে কত ঘণ্টা যে ঘরমুখো মানুষের এই সড়কে বসে থাকতে হবে তার হিসাব নেই। প্রতিবছর ঈদেই আমরা দেখে আসছি এই যানজটের চিত্র। এত চাপ থাকা সত্ত্বেও রাস্তাটির দিকে কর্তৃপক্ষের নজর নেই।

জামালপুর গামী দূরপাল্লার বাস বিনিময় পরিবহনের চালক রফিকুল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলো বেশির ভাগ চন্দ্রা হয়ে বাইপাইল এসে হয়তো টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক অথবা ঢাকা-আরিচা সড়ক দিয়ে টারমিনালে যায়। আমাদের গাড়ি সারা বছর এই সড়কে চলে। সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বগাবাড়ি বাজারের পর থেকে ইউনিক পর্যন্ত ও শিমুলতলা থেকে জামগড়া পর্যন্ত। সামনে ঈদ এই রুটে যানজটে পড়তে হবে।  

পোশাক শ্রমিক আরশাফ আলী বাংলানিউজকে বলেন, সড়কটির পানি নিষ্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি না থাকলেও পানি জমে থাকে।  

এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অবস্থা জানতে সোমবার বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, গাবতলী থেকে নবীনগর পর্যন্ত সড়কের অবস্থা ভালো রয়েছে। এরপর থেকে ধামরাইয়ের অংশে সড়কে কাজ করার কারণে বিভিন্ন জায়গায় গর্ত করে রাখা হয়েছে। এছাড়া রাস্তা চার লেনের করা হলেও এখনো কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। এতে করে এই সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে যানবাহনের যাতায়াতের জন্য রাস্তা এখনো প্রস্তুত না করায় ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে সড়কের যানজট।

ঢাকা জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শামীম আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এরই মধ্যে ঈদযাত্রার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। যেন ঈদ যাত্রার দুই-তিন দিন সড়ক যানজট মুক্ত রাখা যায়। মানুষ যেন স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে।

টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক বেহাল অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি তাকে জানানো হলে তিনি বলেন, আসলে আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য আমাদের কাছ থেকে সড়কটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে সেতু বিভাগ। এরপর থেকে এক্সপ্রেসওয়েটির প্রকল্প পরিচালক সাহবুদ্দিন সাহেব এই সড়কের দেখভাল করেছেন। তবে আমাদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর পর্যন্ত সড়ক ভালো রয়েছে।

ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খানকে কয়েকবার ফোন করে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সাভার ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ঈদের ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের সাভার জোনের ট্রাফিক ইনর্চাজ আব্দুস সালাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এসএফ/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।