ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিধবার জমি দখল করে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির অভিযোগ 

এ কে এস রোকন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২২
বিধবার জমি দখল করে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির অভিযোগ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় এক বিধবার  ভোগদখলীয় খাস জমি দখলে নিয়ে পুকুর খনন এবং সেই মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।  

যদিও ওই ইউপি চেয়ারম্যান দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন সরকারিভাবে পুকুরটি খনন করা হচ্ছে।

 

মৃত সওদাগর আলীর স্ত্রী ভুক্তভোগী (বৃদ্ধা) জরিনা বেগম জানান, তার ভোগদখলীয় খাস জমিতে ৯টি আম গাছসহ বিভিন্ন জাতের গাছ ছিল। দীঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি এ জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত ১ মার্চ তার ভোগদখলীয় জমির গাছগুলো কেটে পরিষ্কার করে সেখানে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করছেন একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম। এ নিয়ে অসহায় বিধবা জরিনা অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সমাধান না পেয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গাবাড়ি মৌজার প্রায় ৫ একর খাস জমির মধ্যে জরিনা বেগমের দখলে ছিল প্রায় দেড় একর। জরিনা বেগম তার স্বামীকে নিয়ে এ জমিটিতে বাড়ি বানিয়ে বাস করতেন। কিন্তু জমিটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় এবং বারবার পানি উঠে ডুবে যাওয়ায় স্বামীর মৃত্যুর পর অন্যের আশ্রয়ে চলে গিয়ে ওই জমিটি উঁচু করে সেখানে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগান। সেই টাকার যোগান দিতে তাকে বিক্রি করতে হয় গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ শেষ সম্বলও।

১ মার্চ হঠাৎ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জোর করে তার সব গাছ কেটে জমিসহ পুরো ৫ একর খাস জমিতে পুকুর খনন শুরু করেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে চেয়ারম্যানের তোপের মুখে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি। তার দাবি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দেওয়ায় চেয়ারম্যানের পেটুয়াবাহিনী যখন তখন তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
জমিটি তার নামে লিজ আছে কিনা জানতে চাইলে জরিনা বেগম জানান, তিনিসহ কয়েকজন স্থানীয় ভূমি অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় লিজ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যার দখলে জমিটি আছে তাকেই আবার দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে বাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই জায়গাটি পরিত্যক্ত ছিল। তাই পরিষ্কার করা হয়েছে। খাস জমিতে পুকুর খননের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারিভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। সেখানে মাছ চাষ করবে কি না তা সরকারের বিষয়।

অপরদিকে গোমস্তাপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, পুকুর খননের বিষয়ে আমার জানা ছিল না। সেখানে তহসিলদারকে পাঠিয়েছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের তহসিলদার এস মোহাম্মদ আলী জানান, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। সেই জায়গাটিতে আগেই পুকুর খনন করা হয়েছে। সেখানে সরকারিভাবে কোনো পুকুর খনন করা হচ্ছে না।
    
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) এ কে এম গালিব হোসেন জরুরি সভায় আছেন জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।