ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতা নয়: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতা নয়: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল কোনো সামরিক জোট নয়। এর উদ্দেশ্যও সেটা নয়।

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্রপন্থী অঞ্চল বা চীনপন্থী অঞ্চলের মধ্যেকার প্রতিযোগিতাও নয়। প্রকৃতপক্ষে, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে স্বতন্ত্র অঞ্চল হিসেবেই দেখি।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে অগ্রযাত্রা: উন্মুক্ত, সহিষ্ণু ও আন্তঃসংযুক্ত বঙ্গোপসাগর ও বহির্বিশ্বের উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ভিন্ন হলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য দু’দেশের রূপকল্প অভিন্ন। যেসব ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন  হয়, সেগুলো নিয়েই আমরা অগ্রসর হই, যেগুলোতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে পারি এবং করি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলপত্রে পাঁচটি মূল উপাদান রয়েছে যা এ অঞ্চলে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সম্পৃক্ততার পথনির্দেশ করবে।  যুক্তরাষ্ট্র এমন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্বপ্ন দেখে যা হবে: ১. অবাধ ও উন্মুক্ত ২. আন্তঃসংযুক্ত ৩. সমৃদ্ধশালী ৪. নিরাপদ ও ৫. ঝুঁকি-সহিষ্ণু।

তিনি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার নৃশংস ও বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবাণী। আমাদের নীতি-আদর্শগুলো অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। একটি বিষয় আমি সুস্পষ্ট করতে চাই, এই নীতি-আদর্শগুলো সুরক্ষার লক্ষ্য কোনো দেশকে দাবিয়ে রাখা নয়। বরং সব দেশের জন্য তাদের নিজ নিজ পথ বেছে নেওয়ার অধিকার সুরক্ষা করা, যা হবে জবরদস্তি ও ভয়ভীতিমুক্ত। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।  

উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ তাদের স্থল ও সমুদ্র-সীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে বঙ্গোপসাগরকে বিশ্বের কাছে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত করে তুলেছে। তাছাড়া অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল হবে এমন একটি এলাকা যেখানে মালামাল, ধারণা ও মানুষ অবাধে স্থল, সাইবার পরিসর ও উন্মুক্ত সমুদ্রে চলাচল করবে।
এ অঞ্চলের সমুদ্র ও আকাশপথ যাতে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত ও ব্যবহৃত হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবো। অত্যাবশ্যক ও বিকাশমান প্রযুক্তি, ইন্টারনেট ও সাইবার পরিসর বিষয়ে গোপনীয়তা ও মানবিক মর্যাদা সুরক্ষাকারী যৌথ পন্থাগুলোকেও আমরা এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হবো। আমরা অব্যাহতভাবে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বে শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তুলবো। যৌথ সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী হিসেবে কাজ করতে হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমসটেক সচিবালয়ের আয়োজক, ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ার এবং সার্ক, কলম্বো প্ল্যান ও আরও বহু কিছুর সক্রিয় সদস্য হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোকে সহায়তা দেওয়ার গুরুত্বও বাংলাদেশ জানে- যেমন তারা মালদ্বীপকে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সহায়তা দিয়েছে কিংবা শ্রীলঙ্কায় তীব্র নগদ অর্থ সংকটকালে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে সহায়তা করেছে। রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি এক সঙ্গে যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।