ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডাকাত আতঙ্ক থেকে মুক্তি চান তরমুজ ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
ডাকাত আতঙ্ক থেকে মুক্তি চান তরমুজ ব্যবসায়ীরা

বরিশাল: শুরু হয়েছে তরমুজের মৌসুম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বরিশাল বিভাগে এবছর তরমুজ উৎপাদনে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে।

তাই বরিশালের বাজারগুলোতে মৌসুমের শুরুতেই স্থানীয়র পাশাপাশি ভোলা ও পটুয়াখালী বিভিন্ন চরাঞ্চলের তরমুজ আসতে শুরু করেছে।

তবে মৌসুমের শুরুতেই নতুন আতঙ্ক ডাকাতদের দৌরাত্ম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা।

তারা বলছেন, পটুয়াখালীর বাউফলের ধুলিয়ার চর থেকে ভোলার টেংরার চর, মুন্সির চর আর ডাকাতিয়ার চর। যে এলাকার মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে কেবল তেতুঁলিয়া নদী। আর এই নদীর ওইসব স্থান বর্তমানে ডাকাতদের এলাকায় পরিণত হয়েছে।
যেখানে এখন তরমুজের মৌসুমকে ঘিরে চলে দিনরাত ডাকাতি। যেখানে শুধু নগদ অর্থ নয়, মোবাইল, ট্রলারের ইঞ্জিনসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতরা।

ডাকাত দলের হামলার শিকার ও তরমুজের পাইকার ফরিদ মৃধা জানান, এদের কাছে দেশীয় অস্ত্র থাকে। গত বছর তরমুজ বোঝাই ট্রলার নিয়ে লালমোহন থেকে চাঁদপুরে যাওয়ার সময় বাঘমারা খালে এসে ডাকাতদলের কবলে পড়েন। সেসময় তার
ওপর নির্যাতন চালালে কোনোভাবে পালিয়ে রক্ষা পান। পরে যখন ডাকাতরা চলে যায়, তখন দেখতে পান মাঝিকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।

রফিক বেপারী নামে অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, শুধু দেশীয় অস্ত্র নয়, আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে এদের কাছে। আর ডাকাতরা ট্রলারে উঠেই মাঝিকে আহত করে। এরপর নগদ টাকা, মোবাইলের সঙ্গে ট্রলারের ইঞ্জিন পর্যন্ত নিয়ে যায়।
তার মতে টাকা-পয়সা নেয় তাতে অসুবিধা নেই, কিন্তু রক্তাক্ত জখম করলে সেই আঘাত থেকে সেরে উঠতে দীর্ঘদিন সময় লাগে তাদের। এই আতঙ্ক থেকে মুক্তি চান তিনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ১৯ মার্চ রাতে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আর ২২ মার্চ সন্ধ্যার পর ভেদুরিয়ার চর থেকে কয়েকটি গরুও নিয়ে যায় ডাকাতরা।

 নদীপথে ডাকাতি রোধে কেবল থানা পুলিশ নয়, নৌপুলিশ এবং কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করার দাবি জানিছেন তরমুজ ব্যবসায়ী গনেশ দত্ত। নয়তো তরমুজ চাষিরা ফলনের দাম না পেয়ে নিরুৎসাহিত হবে এবং তরমুজ নিয়ে এ অঞ্চলে  ১’শ ৫০ কোটি টাকার বাণিজ্যে রিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ মহা পুলিশ পরিদর্শক একেএম এহ্সান উল্লাহ বলেন,তরমুজ চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে, নিরাপত্তা, পরিবহনসহ কোনো সেক্টরে সমস্যা থাকলে তা জানা হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে, যা প্রতিপালনও করা হচ্ছে।

এদিকে জানা গেছে, বরিশাল রেঞ্জের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতো ২৪ মার্চ ভোলা সদর থানা পুলিশ ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চরগাজী বাজারে তরমুজ চাষি এবং ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছেন।
একইভাবে বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশও সভা করেছে।  

এছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা, বাউফল থানার অফিসার ইন চার্জদেরও সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর ব্যবসায়ীরা যেন একযোগে ৫৬ টি ট্রলার জলদস্যু কবলিত এলাকা পাড়ি দেন এমন সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সেখানে টহল পুলিশ রাখার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
এমএস/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।