ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সবুজবাগে গৃহবধূ মুক্তা হত্যা

এসি মেরামতের উছিলায় বাসায় ঢোকে দুর্বৃত্তরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
এসি মেরামতের উছিলায় বাসায় ঢোকে দুর্বৃত্তরা

ঢাকা: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সার্ভিসিংয়ে আসা লোকজন গৃহবধূ তানিয়া আফরোজ মুক্তাকে (২৮) হত্যা করেছে বলে ধারণা করছেন তার স্বামী মাইনুল ইসলাম। বাসার আলমারি থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার সময় তা দেখে ফেলায় মুক্তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।


পরে শনিবার (২৭ মার্চ) দিনগত রাতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে  ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

রোববার (২৭ মার্চ) ঢামেকের মর্গে মুক্তার মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বামী মাইনুল ইসলাম। তিনি ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজের ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে চাকরি করেন মাইনুল। ৮ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তানিয়াকে। মায়মুন (৪) ও তানভিরুল ইসলাম নামে তাদের ১০ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।

তিনি বলেন, শনিবার বেলা চারটার কিছু আগে ৫২মিনিটে তানিয়া তাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছিল এসি সার্ভিসিংয়ের জন্য বাসায় কয়েকজন লোক এসেছে। তখন স্ত্রীর ফোনের মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই ব্যক্তিরা বলেন, ‘দেড়মাস আগে আপনাদের এসি সার্ভিসিং করে দিয়ে গেছি। তাই আবার আসলাম, সার্ভিসিং করা লাগবে কিনা তা জানতে। ’ উত্তরে তিনি (মাইনুল) বলেন, এখন সার্ভিসিং লাগবে না, পরে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করা হবে। তখন স্ত্রীকেও বলেন তাদেরকে বিদায় করে দিতে।

রাতে মুগদা হাসপাতালের পরিচিত একজন তাকে ফোন দিয়ে জানান, তার ছেলে তানভিরুল ওই হাসপাতালে ভর্তি। বিষয়টি জানার জন্য তখন তিনি স্ত্রী তানিয়ার ফোনে কল করেন। কেউ রিসিভ না করায় পরে বাড়িওয়ালাকে ফোন করলে তিনি বাসায় আসতে বলেন। এরপর রাতে ফরিদপুর থেকে ঢাকার এসে স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।

মাইনুল বলেন, আমার সন্দেহ ওই ব্যক্তিরা তানিয়াকে ভুল বুঝিয়ে বাসায় ঢুকে এসি সার্ভিসিং করছিল। কারণ তিনি রাতে বাসায় গিয়ে এসির কাভার খোলা অবস্থায় দেখতে পান। তারা এসির কাজ করার সময় হয়তো আলমারি খুলে সেখানে হাতাহাতি করছিল। তখন তানিয়া দেখে ফেলায় তারা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আলমারিতে জামা-কাপড়ও ছড়ানো ছিটানো ছিল।

এদিকে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন সবুজবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিনা আউয়াল। সুরতহালে তিনি উল্লেখ করেন, নিহত তানিয়ার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে, ডান কানের নিচে কাটা ক্ষত, মাথার মাঝখানে আড়াই ইঞ্চি পরিমাণ ও মাথার পিছনের অংশে ডান কানের লতি থেকে বাম কান পর্যন্ত ১১ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা, ডান কাঁধের পেছনে সাড়ে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা ক্ষত রয়েছে। সবুজবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আজগর আলী জানান, নিহতের স্বামী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তাছাড়া পুলিশও প্রাথমিক ভাবে জানতে পারে  এসি মেরামতের নাম করে কয়েকজন বাসায় ঢুকেছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে সবুজবাগ দক্ষিণগাঁও বেগুনবাড়ি মাস্টার গলির মজিবর রহমানের বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তানিয়ার মরদেহ এবং তার ছেলে-মেয়েকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেচানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

তানিয়ার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম মিস্টার মিয়া। তানিয়ার শিশু ছেলে তানভিরুল মুগদা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েন স্বজনরা।

>>> আরও পড়ুন: মায়ের মরদেহের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা ছেলে-মেয়ে উদ্ধার
 

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ, ২০২২
এজেডএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।